কাটমানি নিয়ে তৃণমূলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কাটমানি নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে কাটমানির টাকা সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে, এমন বার্তাই দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর তৃণমূলের একের পর এক নেতা-কর্মীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার যোগ্য হলেই অন্য দলের নেতাদের দলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন বিজয়বর্গীয়। বর্তমানে বাংলায় কাটমানি উত্তাপে দলবদলে সেই বাছাইপর্বের কাজে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব যে অত্যন্ত ‘সচেতন’, তাই কার্যত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
কাটমানি ইস্যুতে শনিবার মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ বলেন, ‘‘বহু লোক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, বুঝতে পেরেছেন, সুদ-আসল একসঙ্গে উশুল হবে। তাই বিজেপিতে আসছে। আমি বলছি, আসবেন আপানারা, নিশ্চয়ই নেব। কিন্তু কারও টাকা নিয়ে থাকলে শোধ করে আসতে হবে...বিজেপি দল অনেক বড়। আমাদের মন অনেক বড়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল’’।
আরও পড়ুন: কাটমানি ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভ রাজ্যে, চলছে ঘেরাও পর্ব
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন লাভপুরের বিধায়ক মণিরুল ইসলাম। ‘খুন-সন্ত্রাস’-এ অভিযুক্ত মণিরুলকে দলে নেওয়ায় জোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বঙ্গ বিজেপিকে। সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি দলের অন্দরের একাংশেই ক্ষোভ জন্মায়। এমনকী, এর জেরে মণিরুলের মুখে ইস্তফা দেওয়ার কথাও শোনা যায়। মুকুল রায়ও বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু এখনও এ ব্যাপারে কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। তৃণমূলে ‘অন্যায়’ করেছেন যাঁরা, সেইসব নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যাতে অস্বস্তিতে না পড়তে হয় দলকে, সে কারণেই কাটমানি নিয়ে এভাবে দিলীপ ঘোষ সরব হলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অন্যদিকে, একদা মমতা সেনাপতি মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূল নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। মণিরুলও তার ব্যতিক্রম নন। এদিকে, মুকুল রায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বিভাজন নিয়েও জোর চর্চা দলের অন্দরে। সেই প্রেক্ষিতে মুকুল রায়কেই এদিন দিলীপ ঘোষ প্রচ্ছন্ন বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: বাড়িতে বউয়ের কাছেও এবার মার খাবে পুলিশ: দিলীপ ঘোষ
প্রসঙ্গত, জনপ্রতিনিধিদের কাটমানির টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রীর এহেন নির্দেশের পরই বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কাটমানির টাকা ফেরতের দাবিতে ‘নজিরবিহীন’ ভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলে। বহু তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। যত দিন এগোচ্ছে, এ ইস্যুতে বিক্ষোভ প্রদর্শন ততই মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে দিলীপের এহেন মন্তব্য রাজনৈতিক দিক থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।