জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডকে হাতিয়ার করে ক্রমশই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য জুড়ে হিংসার ঘটনার প্রতিবাদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিজেপির অবস্থান মঞ্চে দাঁড়িয়ে শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। মমতাকে কটাক্ষের সুরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘প্রাণহানি হচ্ছে, আর মুখ্যমন্ত্রী নিজে বসে বসে কার্নিভাল দেখছেন’’। উল্লেখ্য, শুক্রবার রেড রোডে পুজো কার্নিভালকে একহাত নিয়ে আগেও মমতাকে আক্রমণ করেছিলেন দিলীপ। পাশাপাশি জিয়াগঞ্জকাণ্ডে রাজ্যপালের সোচ্চার হওয়া নিয়ে যেভাবে আসরে নেমেছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা, সে প্রসঙ্গেও ঘাসফুল শিবিরকে এদিন নিশানা করেছেন এই বিজেপি সাংসদ।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিজেপির অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো বাঙালির বড় উৎসব। এবার কমপক্ষে ৫০টি পুজোর উদ্বোধন করেছি। সব জায়গায় প্রার্থনা করে মাকে বলেছিলাম, এই ৪-৫ দিন যেন শান্তি থাকে বাংলায়। মা কথা শুনেছিলেন। কিন্তু পুজো শেষ হতেই অনেকের ঘরে অন্ধকার নেমে আসবে, মায়ের কোল খালি হবে, পরিবার শেষ হয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি। মায়ের কাছে প্রার্থনা, আগামী দিনে এরকম দুর্গাপুজো যেন করতে না হয়, সেই আশীর্বাদ কর। এরকম বিজয়া দশমী যেন করতে না হয়। মায়ের এতে কোনও হাত নেই। আমাদের রক্ষা করার দায়িত্ব এই সরকারের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের আনন্দকে দুঃখে পরিণত করেছেন। আর নিজে বসে বসে কার্নিভাল দেখেছেন’’।
উল্লেখ্য, জিয়াগঞ্জে সপরিবারে স্কুল শিক্ষক খুনের ঘটনায় সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। যা ঘিরে রাজ্যপাল-তৃণমূল সংঘাতও নয়া মোড় নিয়েছে। রাজ্যপালের এভাবে সরব হওয়াকে একেবারেই ‘ভাল চোখে’ দেখছে না শাসকদল। এ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যখন নিজের হৃদয়ের কষ্টের কথা ব্যক্ত করেছেন, তখন মমতার হালকা ও ভারী মন্ত্রীরা বলছেন রাজনীতি হচ্ছে! একটা খুন হল, সেটা রাজনীতি নয়? রাজ্যপালের কথা ব্যক্ত করার অধিকার নেই! এজন্য তৃণমূলের অনুমতি লাগবে?’’। এ ক্ষেত্রে বাংলার রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়েছেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ও। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যা বলেছেন, একশো শতাংশ ঠিক বলেছেন’’।
আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড: বন্ধুর ‘অভিশপ্ত বাড়ির’ দিকে তাকাচ্ছেন না আতঙ্কিত প্রতিবেশীরা
এ ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসন তো দু’জনকে ধরেছে। ওরা তো কিছুই জানে না। আরএসএস বলছে তাদের কর্মী নন, বিজেপি বলছে আরএসএস কর্মী। আগে নিজেরা ঠিক করুক। পরিবার বলছে রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন না। এসব নাটক’’। উল্লেখ্য, বিজয়া দশমীর দিন জিয়াগঞ্জে নিজের বাড়িতে খুন হন স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর স্ত্রী বিউটি পাল এবং পুত্র অঙ্গন পাল। নিহত স্কুল শিক্ষক আরএসএস কর্মী বলে দাবি করেছে বিজেপি।