করোনার সৌজন্যে ক'দিন আগেই বাংলায় সর্বদল বৈঠকে রাজনৈতিক ঐক্যের ছবি ধরা পড়েছিল। ক'দিন যেতে না যেতেই সেই 'বিরল ছবি' উধাও হয়ে গেল বঙ্গভূমিতে। লকডাউনে ত্রাণ বিলিতে প্রাক্তন তণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা সব্য়সাচী দত্তকে 'পুলিশি বাধা' ঘিরে করোনা আবহে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গেল। দলের নেতার ত্রাণ বিলিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সোচ্চার হয়ে মুখ্?মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, ''এতদিন যা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, মোটেই সেবা নয়, পুরোটাই রাজনীতি ছিল। তাহলে আমরাও রাজনীতি করি। যদি উনি সেবা করে থাকেন, তাহলে আমাদের সেবা করতে আপত্তি কোথায়!''
উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মমতা। কখনও হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট করেছেন, কখনও আবার দোকান-বাজারে সামাজিক দূরত্ব কীভাবে বজায় রাখতে হবে, সে ব্য়াপারে সকলকে পরামর্শ দিতে রাস্তায় ইঁটের টুকরো দিয়ে এঁকে দেখিয়েছেন। করোনা রুখতে মমতার ভূমিকার প্রশংসাও হয়েছে বিভিন্ন মহলে। এই প্রেক্ষিতে দিলীপের এহেন আক্রমণ রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্য়সাচী দত্ত এদিন লকডাউনে ত্রাণ বিলি করতে যাচ্ছিলেন। বাড়ির সামনেই তাঁকে আটকায় পুলিশ। সব্য়সাচীর সঙ্গে ছিলেন দিলীপ ঘোষও। পুলিশি বাধার পরই বিজেপি রাজ্য় সভাপতি বলেন, ''প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক সপ্তাহ বাড়িতে বসেছিলাম। দলের কাউকে বেরোতে বলিনি। মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর নেতা-মন্ত্রীরা বেরিয়েছেন। আমাদের লোকেরা বলেছেন, ওঁরা দাঁড়াচ্ছে মানুষের পাশে, আমরা কেন করব না, অনেকে ফোন করেছেন আমায়। সোশ্য়াল মিডিয়ায় লেখা হয়েছে, দিলীপ ঘোষ কোথায়? ঘরের মধ্যে লুকিয়ে আছে! আমরা বীরত্ব দেখাতে চাই না, রাজনীতিও করতে চাই না''।
আরও পড়ুন- ‘দিদি, আপনি একাই কাজ করছেন না’
এরপরই মমতাকে আক্রমণ করে দিলীপ বলেন, ''মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বেরিয়ছি। তাঁর নেতা-মন্ত্রীরা বেরোলে করোনা ছড়াবে না, আর আমরা বেরোলে ছড়াবে, এটা ভুল। অনেক লোক খেতে পাচ্ছেন না, রেশন নেই, বাজারে জিনিস নেই, ভিনরাজ্য়ের শ্রমিকরা আটকে, এসব দেখে আমাদের মনে হয়েছে বেরোনো দরকার''।
মমতাকে নিশানা করে দিলীপ বলেন, ''এতদিন যা চলছিল, তা মোটেই সেবা নয়, মুখ্য়মন্ত্রীর রাজনীতি ছিল। তাহলে আমরাও রাজনীতি করি। যদি উনি সেবা করেন, তাহলে আমাদের সেবা করতে আপত্তি কোথায়। মুখ্যমন্ত্রী ৫০ জনকে নিয়ে বেরোচ্ছেন, আর সেই নাটক দেখার জন্য একশো জন ভিড় করছেন। উনি বলছেন বাড়িতে থাকুন, আর নিজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওঁর কথা কেউ শুনছেন না, তাই পুরোপুরি লকডাউন হচ্ছে না। পার্ক সার্কাস, রাজাবাজারে মেলা চলছে''। মমতার উদ্দেশে মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ''আমরা সহযোগিতা করতে রাজি। উনি শু ভোট-রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত''।