শুক্রবারই ত্রিমুখী ট্রেন দুর্ঘটনায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছে বালেশ্বর। অন্যান্য সময় এই ধরনের ক্ষেত্রে উদ্ধারকাজে নানা গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় সাহায্যের দিকে হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়। কিন্তু, বালেশ্বরের ক্ষেত্রে সেরকম অভিযোগ তেমন একটা ওঠেনি। আর, এই কারণে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজের জন্য এখন নায়কের সম্মান পাচ্ছে ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
এর পিছনে ওড়িশা সরকারের পরিকল্পিত চেষ্টাকেই বিভিন্ন মহল কৃতিত্ব দিচ্ছে। নবীন পট্টনায়কের সরকার ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আরও উন্নত করার চেষ্টা লাগাতার চালিয়ে গিয়েছে। উন্নতমানের সরঞ্জাম ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। আর, তারপরই এল সঠিক সময়ে দারুণ কাজ করে দেখানোর সাবাশি!
এ যেন তিল তিল করে গড়ে ওঠা। ১৯৯৯ সালে সুপার সাইক্লোনে ১০,০০০-এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। সেই ভয়ংকর প্রাণহানির পরেই নবীন পট্টনায়েকের নেতৃত্বাধীন বিজেডি সরকার জরুরি সরঞ্জামে সজ্জিত এক পেশাদার প্রশিক্ষিত দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই ভাবেই জন্ম হয়েছিল ওডিশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (ওডিআরএএফ)।
দেশে এই ধরনের সংস্থা প্রথম। তার অনেক পরে (২০০৬) সালে তৈরি হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। ওড়িশা সরকারের ওডিআরএফ এখন যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলার সাহস রাখে। যে কারণে ওড়িশার বাইরেও বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ওডিআরএএফের ডাক পড়ে।
তথ্য বলছে, ২ জুন ট্রেন বিপর্যয়ের আধঘণ্টার মধ্যে ৩০ জন ওডিআরএএফ কর্মী বালেশ্বরে পৌঁছেছিল আর উদ্ধারকাজে নেমেছিল। দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে কলিঙ্গানগর, বারিপাদা, ভুবনেশ্বর এবং ঢেনকানাল থেকে ১২০ জনে আরও চারটি দল এসে পৌঁছেছিল ঘটনাস্থলে। যোগ দিয়েছিল উদ্ধারকাজে। পরে ওডিশা ফায়ার সার্ভিস এবং এনডিআরএফের একাধিক দল তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছিল। ওডিআরএএফের কর্মীদের সঙ্গে ছিল টাওয়ার লাইট, গ্যাস কাটার, প্লাজমা কাটার ও হাইড্রোলিক স্প্রেডার।
আরও পড়ুন- ‘একটা দল দেখান, যার সঙ্গে বিজেপির আঁতাত নেই’, সাফ কথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর
ওড়িশার শিল্পসচিব হেমন্ত শর্মা সরেজমিনে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, 'ওড়িশা সরকার সময়মতো হস্তক্ষেপ না-করলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারত। ওডিআরএএফ এবং দমকল বাহিনী দ্রুত সংঘবদ্ধ হয়ে ১,২০০ জন আহতর জীবন বাঁচিয়েছে।'