রেড রোডে দুর্গাপুজো কার্নিভালে যখন চোখ রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়, ঠিক তখনই রাজ্যের বিরোধীরা তোপ দাগছেন এই কার্নিভালের আয়োজন নিয়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, শিল্প নেই, কাজ নেই। আর মানুষকে মাতিয়ে রাখতে অযথা অর্থ ব্যয় করে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার।
এদিন দুর্গাপুজো কার্নিভালের কড়া সমালোচনা করেছে রাজ্য বিজেপি। দিলীপ ঘোষ বলেন, "এখানে শিল্প নেই, চাকরি নেই, জীবনের কোনও সুরক্ষা নেই, খুন রাহাজানি চলছে। রাজ্যে রক্তের নদী বইছে। আবার কার্নিভালও হচ্ছে। জানি না, এর থেকে মানুষ কতটা আনন্দ পাবে। শ্মশানের মধ্যে শান্তি দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আনন্দের পরিবেশটা তো থাকা চাই।" দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। দিলীপবাবুর দাবি, "যেভাবে রাজ্যে নৃশংসতা বাড়ছে, তাতে মানুষ ভয়ের মধ্যে আছেন। উৎসব প্রিয় বাঙালিকে এসবের মাধ্যমে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে কেবল এসব দিয় ওগুলো চাপা দেওয়া যাবে না।"
রাজ্যের উদ্যোগে এই কার্নিভালের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস এবং সিপিএম-ও। মহম্মদ সেলিম বলেন, "ফালাকাটায় একটা বাচ্চাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। আমি এখন তার বাড়িতে যাচ্ছি। রাজ্যের অবস্থা এখন এটাই। আর ওনার দুর্গাপুজো শেষ হয়েও উৎসব শেষ হয়নি।" কয়েক বছর ধরেই রেড রোডে কার্নিভালের আয়োজন করছে রাজ্য সরকার। এই প্রাক্তন সাংসদ বলেন, "যে রকম দগদগে ঘা-ওয়ালা শরীরে কসমেটিক লাগানো হয়। সারা দেশে ওইরকমই অর্থনীতির অবস্থা। রাজ্যের অবস্থাও তথৈবচ। কোথাও কোনও কলকারখানা নেই। কাজকর্ম কিছু হচ্ছে না।"
এ রাজ্যে কংগ্রেস ও সিপিএম একজোট হয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের আসন্ন তিনটে উপনির্বাচনে আসন সমঝোতা হয়েছে দু'দলের মধ্যে। এদিন রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের দাবি, "পরিকল্পিত বাজেটে বরাদ্দ কম, অপরিকল্পিত বাজেটে টাকা উড়ছে। এটা রাজ্যের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে দেশের মানুষের পেটে ভাত আছে, হাতে কাজ আছে, সে সব দেশের মানুষের এসব ভাল লাগবে। কিন্তু যাদের পেটে ভাত নেই, হাতে কাজ নেই, মাথায় ছাদ নেই, তাঁদের কাছে এটা আতিশয্য। এই টাকা খরচ করে যদি গরিব মানুষদের পেটে-ভাতের ব্যবস্থা করত, তাহলে সেটা অনেক বেশি কাজের হত।"