উনিশের লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে মরিয়া নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী খরচের কি সীমারেখা থাকা উচিত? এ প্রশ্নই ছুড়ে দিল কমিশন। সোমবার নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে কমিশন সর্বদল বৈঠক ডাকে। যে বৈঠকেই এ ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়। রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী খরচের বহর নিয়ে প্রতিবারই ভোটের আগে জোর চর্চা চলে। এবার তাই রাজনৈচিক দলের ভোটের খরচে লাগাম টানা উচিত কিনা এ নিয়েই চর্চা হল কমিশনের ঘরে। তবে এই আলোচনাতেও চমক। যেখানে সব রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী খরচের সীমারেখার পক্ষে হাত তুলল, সেখানে বিজেপিই একমাত্র দল, যারা নির্বাচনী খরচের সীমারেখার বিপক্ষে সওয়াল করল।
গতকাল কমিশনের সর্বদল বৈঠকে বিজেপি-র হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে পি নাড্ডা। এ প্রসঙ্গে ভূপেন্দ্র যাদব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন যে, সব রাজনৈতিক দলকেই তাদের নির্বাচনী খরচ জানাতে হবে। তবে নির্বাচনী খরচের অঙ্কের কোনও সীমা থাকার দরকার নেই। তিনি আরও বলেন যে, প্রচারের জন্য দলগুলোকে আরও সুযোগ দেওয়া উচিত। পরে এক বিবৃতিতে বিজেপির তরফে জানানো হয় যে, খরচে লাগাম টানার বদলে স্বচ্ছতায় জোর দিতে পারে কমিশন।
কংগ্রেসের হয়ে এদিনের বৈঠকে ছিলেন মুকুল ওয়াসনিক ও মহম্মদ খান। এ ব্যাপারে ওয়ানসিক জানান যে, তাঁর দল এ সিদ্ধান্তে সমর্থন করে। পরে এক বিবৃতিতে দলের তরফে জানানো হয় যে, নির্বাচনে দলের খরচ নির্দিষ্ট করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে কংগ্রেস। জনতা দলের(সেকুলার) দানিশ আলি বলেন যে, একটা দল বাদে সব দলই এ ব্যাপারে একমত হয়েছে। ভোটের সময় রাজনৈতিক দলগুলোকে সাহায্য়ের জন্য দু’হাত ভরে টাকা দেয় বিদেশের কোম্পানি, যা দেশের নিরাপত্তায় গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে, একথায় একমত আপ নেতা রাঘব চাড্ডা ও সিপিএমের নীলোৎপল বসু। ভোটে এসব অপকর্ম বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন এআইএডিএমকে-র এম থাম্বিদুরাই। তিনি বলেন যে, ভোটে কর্পোরেট সংস্থা থেকে অনেক সময়ই টাকা নেয় রাজনৈতিক দলগুলি, যা বন্ধ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন, বিরোধী জোটে যে দল বেশি আসন পাবে সে দল থেকেই প্রধানমন্ত্রী হোক, ফর্মুলা দিলেন শরদ পাওয়ার
সর্বদল বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও পি রাওয়াত বলেন,‘‘বহু দল জানিয়েছে যে, নির্বাচনী খরচের সীমারেখা থাকা উচিত।’’ ৭টি জাতীয় দলসহ ৪০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এদিনের বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করে।
অন্যদিকে, ভোটে ইভিএম নিয়েও এদিন আলোচনা হয় কমিশনের ঘরে। বহুক্ষেত্রেই দেখা যায় ইভিএম বিকল হয়ে যায়, সে নিয়েও এদিন আলোচনা হয়। নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিভিপ্যাট রাখার পক্ষে আওয়াজ তোলে রাজনৈতিক দলগুলো। এদিকে পেপার ব্যালটে ভোট সম্পন্ন করার পক্ষে সওয়াল করে কংগ্রেস। যদিও অন্য কোনও বিরোধী দল এ ব্যাপারে একমত হয়নি। কংগ্রেসের ইভিএম যুক্তি নিয়ে কটাক্ষ করেন বিজেপি ভূপেন্দ্র যাদব। তিনি বলেন, ‘‘ইভিএমের মাধ্যমে ভোটে পাঞ্জাবে যখন কংগ্রেস জিতল, তখন তারা ইভিএম নিয়ে খুশি, আর যখন ওরা হেরে যায়, তখন বলে ইভিএমে গোলযোগ রয়েছে।’’