ভোট দেওয়ার জন্য অস্থায়ী ঠিকানা, কাজকর্ম ছেড়ে নিজের নির্বাচনী এলাকায় ফিরে যেতে হয় পরিযায়ী শ্রমিকদের। এর ফলে, তাঁরা নানা সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যা দূর করতে এবার উদ্যোগী হল নির্বাচন কমিশন। বহুদিন ধরে এই নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছিল। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার যাতে দূর থেকেও ভোট দিতে পারেন, কমিশন সেই ব্যবস্থা করতে চলেছে। এতে, পরিযায়ী ভোটারদের বিশেষ সুবিধা হবে। বিবৃতিতে কমিশন জানিয়েছে, তারা মাল্টি কনস্টিটুয়েন্সি রিমোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (আরভিএম)-এর ব্যবস্থা করতে চলেছে। যার সাহায্যে একটি দূরবর্তী ভোটকেন্দ্র থেকেই ভোটার নিজের নির্বাচনী এলাকায় ভোট দিতে পারবেন।
কমিশন তার বিবৃতিতে বলেছে, 'প্রযুক্তির যুগে শুধুমাত্র পরিযায়ী হওয়ার কারণে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া কোনওমতেই বিকল্প হতে পারে না। গত লোকসভা নির্বাচন হয়েছে ২০১৯ সালে। সেই সময় ভোটদানের হার ছিল ৬৭.৪%। অর্থাৎ, দেশের ৩০ কোটিরও বেশি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। এই ভোটদান এড়িয়ে যাওয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর তুলনায় রাজ্যগুলোতে বেশি করে ধরা পড়েছে।' বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়েছে কমিশন।
আগামী ১৬ জানুয়ারি, এনিয়ে একটি আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে, কমিশন ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী উল্লেখ করেছে, দেশের ৪৫.৩৬ কোটি ভারতীয় বা মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ পরিযায়ী। তবে, তাঁদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ বিবাহ বা অন্যান্য পারিবারিক কারণে পরিযায়ী। কমিশন আরও বলেছে, 'শহুরে উদাসীনতা এবং তরুণদের উদাসীনতার মত অনেক কারণের মতই অভ্যন্তরীণ পরিযায়ী হওয়ার কারণেও ভোটদানে অক্ষমতা ভোটারদের কম ভোটদানের পিছনে অন্যতম কারণ।'
আরও পড়ুন- মেয়াদ ফুরোলেও ফিরছিলেন না, বোধগয়ায় গ্রেফতার চিনা মহিলা
এই অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে বৃহস্পতিবার কমিশন জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ পরিযায়ী সমস্যার ৮৫ শতাংশ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর নয়, বরং রাজ্যগুলোরই। আর, সেকথা মাথায় রেখেই আরভিএম ব্যবহারে জোর দিচ্ছে কমিশন। দেশের যাতে প্রতিটি সাবালক নাগরিক ভোট দিতে পারে, আসলে সেটাই নিশ্চিত করতে চায় নির্বাচন কমিশন। না-হলে কমিশনের এত হা-হুতাশের কোনও কারণ নেই। কারণ, কমিশনের পরিসংখ্যানই দেখাচ্ছে যে গত কয়েক দশকে ভোটারদের তালিকাভুক্তি করা এবং ভোটদানের হার বেড়েছে।
যেমন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ২০ কোটি থেকে বেড়ে ৯১.২০ কোটি হয়েছে। ভোটাদানের হারও এই সময়ে ৫৮.২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৭.৪ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু, তারপরও প্রায় দেশের প্রায় ৩০ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক ভোট দেননি। এই বিপুল সংখ্যক নাগরিকের ভোটদানে অংশ না-নেওয়াই চিন্তা বাড়িয়েছে কমিশনের। আর, তাই সমস্যা মেটাতে কমিশন রাস্তা খুঁজছে।
Read full story in English