'উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যই কিন্তু আফস্পা চায় না। এটি অত্যন্ত বিতর্কিত একটি বিষয়।' সোমবার নাগাল্যান্ড সফর বাতিলের পর সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবের। নাগাল্যান্ডের এই ঘটনার পর উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বসা উচিত বলেও এদিন মন্তব্য করেছেন সুস্মিতা।
Advertisment
আজই নাগাল্যান্ড যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে নাগাল্যান্ডে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। সেই কারণেই সফর বাতিল করতে হয়েছে বলে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানান তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব। উত্তর-পূর্বের অসমের মেয়ে সুস্মিতা। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি অনেকটাই ওয়াকিবহাল।
সাংবাদিক বৈঠকে এদিন নাগাল্যান্ডের ঘটনা নিয়ে সেনার সমালোচনার পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সেনার হাতে দেওয়া অতিরিক্ত ক্ষমতা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সেনার হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা রয়েছে আফস্পা আইনের বলে। তবে নাগাল্যান্ডের এই ঘটনার পর আফস্পা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে বলে মনে করেন সুস্মিতা দেব।
তিনি এদিন বলেন, 'আফস্পা ঠিক মতো কাজ করছে কিনা তা দেখতে হাইপাওয়ার কমিটি তৈরি হোক। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন হল আফস্পা। আফস্পা লাগু ও বাতিলের একটা নিয়ম আছে। উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যই কিন্তু আফস্পা চায় না। আফস্পা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। অমিত শাহের উচিত এখনই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা।' একইসঙ্গে নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে নিরীহ নাগরিকদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে তৃণমূল। নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘটনার উপযুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে নাগাল্যান্ডের মন জেলায় জঙ্গি দমন অভিযান বড়সড় ভুল করে ফেলে সেনাবাহিনী। জঙ্গি ভেবে ভুল করে নির্বিচারে গুল ছুড়তে শুরু করেন অসম রাইলেসের জওয়ানরা। সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ যায় ১৪ নিরীহ নাগরিকের। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় গোটা এলাকায়। পাল্টা জনরোষের বলি হন এক জওয়ানও। ঘটনার পর থেকে অশান্ত গোটা নাগাল্যান্ড।
সংঘর্ষ এড়াতে মন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। সেনার তরফেও ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।