/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/07/firhad-mukul-arjun-759.jpg)
ফিরহাদ হাকিম, মুকুল রায় ও অর্জুন সিং।
কিস্তি দিয়েছিলেন মুকুল-অর্জুন। মঙ্গলবার কিস্তিমাত করে পাল্টা জবাব দিল তৃণমূল। ক’দিন আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ধুকপুকানি বাড়িয়ে একঝাঁক কাউন্সিলরকে বিজেপিতে যোগদান করিয়ে একাধিক পুরসভা দখলের দাবি জানিয়েছিলেন মুকুল রায়, অর্জুন সিংরা। বঙ্গ বিজেপির সেই ‘গেমপ্ল্যান’কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরকে ঘরে ফেরাতে সফল হল তৃণমূল। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা তৃণমূলের তরফে কাউন্সিলরদের নেতা ফিরহাদ হাকিম জানান, হালিশহরের পুরপ্রধান-সহ ৮ জন কাউন্সিলর ফের তৃণমূলে ফিরলেন। এরপরই দলবদল নিয়ে একদা সতীর্থ মুকুল রায় ও অর্জুন সিংকে কড়া ভাষায় নিশানা করলেন ফিরহাদ। ‘‘অমিত শাহের সামনে যত বেশি দলবদল করাবে, ততই নাকি মি. সিং ও মি. রায়ের প্রোমোশন বাড়বে’’, এ ভাষাতেই মুকুল ও অর্জুন সিংকে এদিন বিধেঁছেন ববি হাকিম।
আরও পড়ুন: ‘স্বামীর কথায় নুসরত কি বিজেপিতে যাচ্ছেন?’
ঠিক কী বলেছেন ফিরহাদ হাকিম?
বিজেপিকে নিশানা করে সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বিজেপি এখন হঠাৎ করে সন্ত্রাসের রাস্তা নিয়েছে। ভাটপাড়ায় সন্ত্রাস, সেই সন্ত্রাস আস্তে আস্তে নৈহাটি, হালিশহর, কাঁচরাপাড়ায় ছড়িয়েছে। সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন দলের কর্মীরা’’। এরপরই কটাক্ষের সুরে ববি বলেন, ‘‘ওই যে নতুন সাংসদ, কী নাম যেন অর্জুন সিং, তাঁর নতুন বসের কাছে নিজের প্রোমোশনের জন্য, স্কোর বাড়ানোর জন্য তৃণমূলের কর্মীদের উপর জবরদস্তি করে। আমাদের পুরানো একজন আছেন, মানুষের ইচ্ছের বিরুদ্ধে, ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাস করে। বিজেপি করো না হয় খুন হবে, ভয় দেখিয়ে দিল্লিতে বিজেপিতে যোগদান করানো হচ্ছে’’। এরপরই মুকুল রায়কে একহাত নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘অমিত শাহের সামনে গিয়ে যত জনকে দলে যোগ করাবে, ততই নাকি মি. রায় ও মি সিং-এর প্রোমোশন বাড়বে’’।
আরও পড়ুন: ফের তৃণমূলে ভাঙন! বিজেপিতে তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম
ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের নিষ্ঠাবান কর্মীদের জোর করে ভয় দেখিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবাই মিলে পরে বলেছে, অসহ্য লাগছিল। গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে অস্বস্তি হচ্ছিল। আমরা আর ফের ফিরতে চাই তৃণমূলে। হালিশহরে পুরপ্রধানকে জোর করে দলবদল করানো হয়েছিল। ওঁরা এখন বুঝতে পেরেছেন যে, বিজেপি দফতরে গিয়ে পাপ করেছি। তাই ফিরে এলেন’’।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে আঘাত! বিজেপিতে শুভ্রাংশু-সহ একঝাঁক তৃণমূল কাউন্সিলর
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির উত্থানের পরই নতুন মাত্রায় তৃণমূল ‘ভাঙাতে’ শুরু করেন মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়রা। একদা মমতা ঘনিষ্ঠ মুকুলের হাতযশেই তৃণমূলের একের পর এক নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দেন বলে খবর। হালিশহর, নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভার কাউন্সিলরদের দিল্লি নিয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করান মুকুলরা। ওই পুরসভাগুলি দখলেরও দাবি জানায় বিজেপি। তবে, এভাবে দলছুট কাউন্সিরদের ফের দলে ফিরিয়ে মুকুল-অর্জুনদের কিস্তিমাতের বার্তা দিল তৃণমূল, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু, রাজ্যের চলতি রাজনৈতিক আবহে এভাবে দলছুটদের ফিরিয়ে এনে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে কতটা সফল হবে ঘাসফুল বাহিনী, সেই প্রশ্নও উঠে আসছে।