বঙ্গ রাজনীতিতে ঝালমুড়ির তত্ত্ব ও বাবুল সুপ্রিয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এতদিন রাজ্য রাজনীতিতে ঝালমুড়ির তত্ত্ব নিয়ে নানা চর্চা চলেছে। বাবুল সুপ্রিয়র বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আবারও শিরোনামে ঝালমুড়ি। বাবুলের দলবদলের নেপথ্যে এই ঝালমুড়ি অনুঘটকের কাজ করেছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের নেতা থেকে নেটিজেনদের। তবে, খোদ বাবুল বলছেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝালমুড়ি সৌজন্যের কারণ ছিল। প্রয়োজনে তিনি আবার সেই সৌজন্য করতে পারেন। তবে, এবার আর ঝালমুড়ি দিয়ে নয়, দলবদলের সঙ্গে সঙ্গেই ঝালমুড়ি জায়গা দখল করল ধোকলা। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া আসানসোলের সাংসদের কথায়, এবার তিনি বিজেপির মন্ত্রীদের বাড়িতে ধোকলাও খেতে যেতে পারেন। তবে, তা একটিই শর্তে।
প্রায় বছর চারেক আগের কথা। কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সভা সেরে রাজভবনে ফেরার পথে তৎকালীন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে গাড়ি থামিয়ে বাবুলকে ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনা নিয়ে নানা আলোচনা চলেছে রাজনৈতিক মহলে। এমনকী সেই সময়, বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষদেরও কড়া আক্রমণের শিকার হতে হয় তাঁকে। এরপর একাধিকবার মমতার সঙ্গে তাঁর ঝাড়মুড়ি খাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বাবুল সুপ্রিয়।
আরও পড়ুন- ‘প্রথম একাদশে জায়গা না হলেই…’, বড় ইঙ্গিত বাবুলের
এদিনও করলেন, একইসঙ্গে ঝালমুড়ির পাল্টা সৌজন্যের তত্ত্বও বাতলালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জানালেন এবার তিনি ধোকলাও খেতে রাজি। বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে গিয়ে এবার ধোকলা খেতেও সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাবুলের আপত্তি নেই বলেই সাফ জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, "রাজভবন যাওয়ার পথে ভিক্টোরিয়ার সামনে আমাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়মুড়ি অফার করেন। গাড়িতে আসানসোলের বেশকয়েকটি বিষয়, ইস্টওয়েস্ট মেট্রো সহ মোট চারটি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল। আগামিদিনে কাজের প্রয়োজনে ঝালমুড়ি বদলে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে ধোকলা খেতেও আপত্তি নেই।"
আরও পড়ুন- খেলার ‘লোভেই’ তৃণমূলে বাবুল, কৌশলে এড়ালেন কড়া প্রশ্নের জবাব
তৃণমূলে কেন এলেন তিনি? জবাবে বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, "আমি কোনও ইতিহাস সৃষ্টি করিনি। রাজনীতিতে দল পরিবর্তনের অনেক উদাহরণ আছে। যেভাবে রাজনীতি ছেড়েছিলাম তাতে রিটায়ার্ড হার্ট অনুভূতি হচ্ছিল। তখনই এই সুযোগ এসেছিল। আমি তা লুফে নিয়েছি।"
এতদিন তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘন্টা আগে অবশ্য তাঁর হাত ধরেই জোড়া ফুলে আগমন ঘটেছে বাবুলের। অতীতে বহিবার বাবুল-অভিষেক দ্বৈরথ শিরোনামে এসেছে। যা গরিয়েছে আইনে লড়াইয়ে। যা নিয়ে কৌশলী সাংসদের জবাব, "বাক্স বদল করে নেব। অভিষেক আমাকে যে চিঠি দিয়েছিলেন, তা আমি নিয়ে নেব। আমি যা বলেছিলাম, তা ফিরিয়ে নেব।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "যেসব পোস্ট যদি আমাকে বিড়ম্বনায় ফেলতে পারে, সেগুলোও থাকবে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন