আগামী বছর থেকে বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনে রাজ্যে ছুটি থাকবে। বাঁকুড়ার জনসভা থেকে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি মাসের শুরুতেই দলীয় কাজে রাজ্য সফরে এসে বাঁকুড়ায় গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্ণভোজনের আগে বীরসা মুণ্ডার মূর্তিতে মাল্যদান করেন। সেই মূর্তি আদৌ বিরসা মুণ্ডার কিনা তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের দাবি, ওই মূর্তি আসলে এক আদিবাসী শিকারির। এই ঘটনাকে তুলে ধরে বিজেপির আদাবাসীদের প্রেম নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের অন্যান্যরা।
এবার বাঁকুড়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে বিরসা মুণ্ডা ভেবে অন্য এক মূর্তিতে অমিত সাহের মাল্যদানকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন খাতড়ায় সরকারি জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'সেদিন ঢাকঢোল পিটিয়ে বিরসা মুণ্ডাকে মালা পড়ালেন। কিন্তু এখানকার মানুষের দাবি ওটা এক আধিবাসী শিকারির মূর্তি। আমি আদিবাসী শিকারিকেও সম্মান করি। কিন্তু মিথ্যা কথা বলে কেন মাল্যদান হল? এটা অপমান।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, 'আগামী বছর থেকে বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনে রাজ্যে ছুটি থাকবে। নেতজি, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের জন্মদিননে যেমন রাজ্যে ছুটি থাকে পরের বছর থেকে বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনেও ছুটি থাকবে।'
আরও পড়ুন- নজরে আদিবাসী ভোট ব্যাংক, বিরসাই দু’পক্ষের তুরুপের তাস
আগামী ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। ৫ নভেম্বর রাজ্যে এসে গেরুয়া শিবিরের প্রচারের ঢাকে কাঠি ফেলেছেন অমিত শাহ। নিউ নর্মালে এদিন সেই বাঁকুড়া থেকেই সরকারি জনসভা শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একগুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধনের সঙ্গেই বেশ কিছু প্রকল্পের ঘোষণা করেও তিনি। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের আদিবাসী ভোট ব্যাংকে ধস নেমেছিল। আদিবাসী অধ্যুষিত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রাম আসন দখলব করে বিজেপি। আদিবাসী ভোটারদের বিশ্বাস ফেরাতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী।
আদিবাসীদের বাড়িতে অমিত শাহের মধ্যাহ্নভোজনকেও 'লোক দেখানো' বলে জনসভায় কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আদিবাসীদের কথা বলেন তিনি। আদিবাসী, তফসিলি পরিবারগুলোর কাছে জব-কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, বিপিএল কার্ড রয়েছে কিনা, রাজ্য সরকারি সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পান কিনা তার খোঁজ খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'বাসমতী চাল কিনে এনে আদিবাসী ভাই-বোনেদের বাড়ি রং করিয়ে দিয়ে আমি খাই না। টিভিতে দেখছি মা-বোনেরা উচ্ছে, বাধাকপি কাটছেন আর বাসমতী চালের ভাত, পোস্তর বড়া খাচ্ছেন।'
এদিন 'কর্মই ধর্ম' প্রকল্পেরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পে ২ লক্ষ বেকারকে বাইকের পিছনে ঠাণ্ডা বাক্স করে দেওয়ার ব্যাবস্থা হবে। যাতে করে তাঁরা মাছ, সবজি, প্রয়োজনে এমনি বাক্সয় শাড়ি সহ অন্যান্যা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, '২ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান মানে ১০ লক্ষের সুবিধা করে দেওয়া।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন