সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে দেশজোড়া বিতর্ক চলছে। এবার সেই বিতর্কই উস্কে দিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। সিএএ-এর পক্ষে মঙ্গলবার গুজরাটে ৬২টি ব়্যালি হয়। আমেদাবাদের ব়্যালিতে রুপানি বলেন, 'মুসলমানদের জন্য বিশ্বে ১৫০টি দেশ রয়েছে। তারা সেখানে যেতে পারে। কিন্তু, হিন্দুদের জন্য একটি-ই দেশ- ভারত।'
ভিড়ে ঠাসা বিজেপির ব়্যালিতে রুপানি দাবি করেন ভারতে মুসলমানরা সম্মানের সঙ্গে বসবাস করার সুযোগ পান। তাদের জনসংখ্যাও বেড়েছে। তাঁর কথায়, '৯ থেকে মুসলমানদের জনসংখ্যা ভারতে ১৪ শতাংশে পৌঁছেছে। ধর্ম নিরপেক্ষ সংবিধানের কারণে মুসলমানরা এদেশে সম্মানের সঙ্গে খুব ভালভাবে বসবাস করছেন।'
সিএএ-এর পক্ষে বলতে গিয়ে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পাকিস্তানে হিন্দুদের হার ২২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে গিয়েছে। সেখানে তাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বহু আগে তাই সেদেশ থেকে হিন্দুরা ভারতে চলে এসেছিল। কিন্তু, নাগরিকত্ব না মেলায় তারা সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন না।' বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে রুপানি দাবি করেন, 'সেদেশে হিন্দুদের সংখ্যা শতাংশের বিচারে কমে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশে, আফগানিস্তানে শিখ রয়েছেন মাত্রা ৫০০ জন। আগে সেখানে বসবাস করতেন প্রায় ২ লক্ষ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ।' তাই সেদেশের সংখ্যালঘুদের আপন করতেই নয়া নাগরিকত্ব বিলের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ‘মুসলমানরা নেই কেন?’, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতা-নেতাজির পৌত্র
সিএএ-এনআরসি বিরোধিতায় গোটা দেশ উত্তাল। ধর্মের ভিত্তিতে নতুন আইন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। যা খণ্ডন করে রুপানি এই অশান্তির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেন। বলেন, 'গান্ধীজির আদর্শের সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কোনও বিভেদ নেই। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হয়েছে। তাই প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সহ বাকি পাঁচ সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে আসতে চাইলে অসুবিধা কোথায়? রাজনৈতিক ফায়দা পেতেই কংগ্রেসই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণকে উস্কানির কাজ করছে।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, 'মুসলমানদের জন্য বিশ্বে ১৫০টি দেশ রয়েছে। তারা সেখানে যেতে পারে। কিন্তু, হিন্দুদের জন্য একটি-ই দেশ রয়েছে, তা হল ভারত।' রবিবার প্রধানমন্ত্রী, মঙ্গলবার স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট করে বলেছেন, দেশে এনআরসি লাগুর কোনও বিবেচনা এই মূহূর্তে নেই। বিষয়টি মন্ত্রিসভা বা সরকারে এখনও পর্যন্ত আলোচনাই হয়নি। এক ধাপ এগিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, 'এনপিআরের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। কারোর ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।' কিন্তু, রুপানির দাবি ভিন্ন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'বিজেপির অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল এনআরসি। ভুয়ো নাগরিকদের তাড়াতে এনআরসি লাগু হবেই।' পাশাপাশি তাঁর দাবি, 'ভোটের আগে বিজেপি বলেছিল, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ হবে, সিএএ লাগু হবে, রাম জন্মভূমি তৈরি হবে। সবকটিই পূরণ হয়েছে।'
Read the full story in English