Advertisment

'কলকাঠি নেড়েছেন অনুব্রত, তাই আমার নাম বাদ', বিস্ফোরক তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর

বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন পরপর চারবারের এই কাউন্সিলর।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Guskara Mallika Chongdar accused Anubrata Mondal for her candidature cancel in upcoming polls

পরপর চার বারের কাউন্সিলরের নিশানায় অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রত মণ্ডল কি সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকেও বড় তৃণমূল নেতা? বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদার। আসন্ন পুর নির্বাচনে প্রথমে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হয় তাঁর। কিন্তু পরের তালিকায় তাঁর নাম বাদ যাওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তিনি। দলের এই সিদ্ধান্তে অপমানিত হয়েছেন বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন মল্লিকা চোঙদার। অনুব্রত মণ্ডলের 'কলকাঠি' নাড়াতেই তাঁর আর প্রার্থী হওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মল্লিকা চোঙদারের। তাঁকে বাদ দিয়ে অনুব্রত পছন্দের লোককে প্রার্থী করিয়েছেন বলেও অভিযোগ মল্লিকা চোঙদারের।

Advertisment

পূর্ব বর্ধমানের তিনটি বিধানসভার দায়িত্বে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে দলীয় সংগঠন সাজানো থেকে শুরু করে পুরসভা, পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্বই দল অবনুব্রতর কাঁধে ছেড়েছে। আসন্ন পুর নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীদের নামের তালিকা শুক্রবার প্রকাশ করা হয়। দলের ওয়েবসাইটে প্রথমে একটি প্রার্থী তালিকা আপলোড করা হয়।

তবে সেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। দিকে দিকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থী পছন্দ না হওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। কোথাও কোথাও প্রার্থী হতে না পেরে অনুগামীদের নিয়ে রাস্তা অবরোধে বসতে দেখা যায় তৃণমূলের নেতাদের। রাজ্যজুড়ে দলের একাংশের এই প্রবল ক্ষোভে অস্বস্তিতে পড়ে যায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তড়িঘড়ি ফের একটি সংশোধিত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এমনকী দলের তরফে জানানো হয়, যে প্রার্থী তালিকায় দলের দুই নেতা সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সই রয়েছে সেটাই দলের নির্দিষ্ট প্রার্থী তালিকা। এই তালিকাও আপলোড করে দেওয়া হয় দলের ওয়েবসাইটে। তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে জানানো হয় প্রথমে আপলোড করা তালিকাটি সঠিক নয়। সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সই থাকা প্রার্থী তালিকাটাই দলের সঠিক প্রার্থী তালিকা।

গুসকরার প্রাক্তন কাউন্সিলর মল্লিক চোঙদারের দাবি, গুসকরার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তাঁর নাম পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সির সই করা তালিকায় ছিল। কিন্তু পরে তাঁর নাম আবার বাদ চলে যায়। দলের প্রার্থী তালিকায় নাম ওঠা ও পরে বাদ যাওয়া নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ প্রাক্তন কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদার। অনুব্রত মণ্ডলকেই তিনি এর জন্য দায়ী করেছেন। তিনি জানান, পাঁচ বার তিনি গুসকরা পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। এমনকী একবার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- দলনেত্রীর নির্দেশই সার, পুরপ্রার্থী নিয়ে তৃণমূলে চরম কোন্দল, প্রশ্নের মুখে সংগঠনের রাশ

তাঁর দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর মতের মিল হয় না। তাই অনুব্রতর পছন্দের তালিকাতে না থাকায় তাঁকে বাদ দেওয়া হল। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দেগে মল্লিকা চোঙদার বলেন, ''বীরভূমে বসে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা চালান অনুব্রত মণ্ডল।'' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বেহধন্য কেস্টর বিরুদ্ধে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন মল্লিকাদেবী। তিনি বলেন, ''পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সিদের থেকেও অনুব্রত মণ্ডল বড় নেতা হয়ে গেলেন কিনা বুঝে উঠতে পারছি না!''

তবে মল্লিকা চোঙদারের এই অভিযোগের পাল্টা কিছু বলতে রাজি হননি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অন্যদিকে, তৃণমূলে এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন, ''তৃণমূলে এখন সার্কাস চলছে। তাই ওদের সার্কাস নিয়ে তাঁর কিছু বলার নেই। তবে জেলার মানুষ তৃণমূলে সার্কাস দেখছেন।''

tmc anubrata mondal East Burdwan
Advertisment