আশঙ্কা (বা আশা) ছিলই। আলটপকা কিছু বলবেনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রত্যাশিত পথেই হাঁটলেন তিনি রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ময়নার সভাতে। যথারীতি কোনও রাখঢাক না রেখেই। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক বেফাঁস মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সম্ভবত স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশিই উচ্চকিত ছিল তাঁর স্বর।
এদিন বিকেলে ময়নার হোগলাবেড়াতে বিডিও অফিস সংলগ্ন মাঠে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে একের পর এক চটকদার কথায় দিলীপবাবু বিভিন্ন বার্তা দিলেন দলীয় কর্মীদের। বললেন, "সিপিএম আর কংগ্রেস বলছে আমি নাকি তৃণমূল হয়ে গিয়েছি। আরে ভাই, আমি টিএমসির কবর খুঁড়তে এসছি। ছ’ফুট নিচে। এরা মানুষের উপর যা অত্যাচার করেছে, তাতে এদের পতন অবশ্যম্ভাবী। এদের শেষ দিন এগিয়ে আসছে। ১৯ থেকেই পতন শুরু হবে।"
আরও পড়ুন: মমতার জন্মদিনে মজা করেছিলাম, অবস্থান বদল দিলীপ ঘোষের
সকলে জানতে চাইছেন, আপনি নাকি মমতাকে প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু স্পষ্ট বলেন, "এ সব কথার কথা"। 'মমতাই হতে পারেন প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী' - শনিবার মুখ্যমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এমন কথা বলে কার্যত হইচই ফেলে দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু শোরগোল যতই হোক, দিলীপবাবুর এমন বাচনের কোনও বিশেষ তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন না রাজনীতিকরা। উল্টে, মন্তব্যের দায় এড়াতে তিনি যে আবার বাজারে চর্চার নয়া খোরাক যোগান দেবেন, সে বিষয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সকলেই। রবিবার যা স্পষ্ট হয়ে গেল ময়নার সভাতে।
দিলীপবাবু বলেন, "আমি কেন, সারা পশ্চিমবঙ্গের লোক চাইলেও মমতাকে প্রধানমন্ত্রী করতে পারবেন না। পাগলেও বিশ্বাস করবে না মমতা ব্যানার্জি প্রধানমন্ত্রী হবেন। আমরা তো সুস্থ মানুষ। এই রাজ্যে ৪২টি সিট আছে। অন্য কোথাও তো এদের দোকান নেই। ত্রিপুরা ও আসামের দোকানে আমরা তালা মেরে দিয়েছি। এখন ৩৪ টি সিট রয়েছে ওদের।আগামী ইলেকশানে ৩৪ টা সিট জিতে দেখাক তৃণমূল। তাহলে আমি মেনে নেব মমতা প্রধানমন্ত্রী।নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। যতদিন নরেন্দ্র মোদী আছেন, আর কোনও চান্স নেই।"
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই ময়নার বাকচাকে উত্তপ্ত করে রেখেছে বিজেপি। সম্প্রতি একাধিক বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে ময়নায়। সেই আবহেই দিলীপবাবুকে আনিয়ে এলাকায় চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা চালাল বিজেপি।