পুরনির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবাধে ছাপ্পা, রিগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। ভোট শুরুর কিছু পরেই ভাটপাড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও। ভাটপাড়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ভাটপাড়া হাইস্কুল থেকে চার বিজেপি এজেন্ট ভোটে ছাপ্পার প্রতিবাদে বেরিয়ে গিয়েছেন বুথ থেকে। ঘরের দরজার সামনে উড়ছে ঘাসফুল পতাকা। এরই মধ্যে ভাটপাড়া হাইস্কুলে গিয়ে ভোট দিলেন ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবের পরিবার।
Advertisment
জয়প্রকাশ যাদবের দুই সন্তান। ৭ বছরের অনুজ ও ৫ বছরের অনুষ্কার ভাবুক চোখ। স্ত্রী সঙ্গীতা যাদবের চোখে-মুখে এখনও গত জুন মাসের আতঙ্কের ছাপ। ছোট্ট এই বাড়িতে থাকেন জয়প্রকাশের বাবা মিশ্রিলাল ও রাজমতী যাদব। শ্বশুরের সামান্য রোজগার ও চেয়ে-চিন্তে সংসার চলছে সঙ্গীতাদের। স্বামীর খুনের পর কেউ সেভাবে পাশে দাঁড়াননি বলেও জানালেন বছর আটাশের সঙ্গীতা। খুনে অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত হয়ে বাইরে ঘুরে বেরানোয় জয়প্রকাশের পরিবারের মধ্যে একটা চাপা ভয় রয়েছে।
পুরভোটের দিন দুপুর ১২টা নাগাদ সঙ্গীতা যাদবের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল ঘরের দরজার সামনে পত পত করে উড়ছে ঘাসফুলের পতাকা। গত বছর নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় ভাটপাড়ার ইস্ট ঘোষপাড়ার বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব খুন হয়েছিলেন। গত জুনে জয়প্রকাশ যাদবের খুনের পর পরিবারের স্থায়ী রোজগারের জন্য দলও কোনও ব্যবস্থা করতে পারেনি। কোনওরকমে দিন গুজরান করছেন একসময়ের গেরুয়া শিবিরের এই একনিষ্ঠ এই কর্মী। এত প্রতিবন্ধকতা সত্বেও এই ছোট্ট বাড়িতে থেকেই দুই ছোট্ট সন্তানকে আগলে রেখে জীবনযুদ্ধের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীতা।
ভোটের দিন ভাটপাড়া উত্তপ্ত ছিল। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী ছাপ্পার অভিযোগ তুলে অবাধ ভোটের দাবিতে রাস্তায় বসে পড়েন। এত কিছু সত্ত্বেও ভাটপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে রবিবার সপরিবারে ভোট দিয়েছেন সঙ্গীতা। সঙ্গীতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'এখনও ভয়ে ভয়ে থাকি। আবার বেশি আতঙ্কে থাকলে জীবনে লড়াই করতে পারব না সেটাও জানি। তাহলে এই বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে। ওরা আরও পেয়ে বসবে। তাছাড়া জীবনের সঙ্গীকেই তো কেড়ে নিয়েছে। কী আর হবে। তাই হাজার রক্তচক্ষু বা সংসারে চরম আর্থিক অনটন থাকলেও এই বাড়িতে থেকেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।'