scorecardresearch

ভোট প্রাপ্তিতে নির্দলদের ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’, কলকাতার ফলাফল-ই কী বাকি পুরভোটে অণুপ্রেরণা?

কলকাতা পুরসভায় শয়ে শয়ে নির্দল প্রার্থীর লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাকি পুরসভায় নির্দলপ্রার্থীরা কতটা উৎসাহিত হয়! সেটাই এখন দেখার।

KMC Poll, High Court, Bengal Government
কলকাতা পুরনিগম। ফাইল ছবি

তিন নির্দল প্রার্থীর জয় সামনে এলেও বাকিদের ভোটপ্রাপ্তির দৈন্যদশা দেখে ঘোড়াও যে হাসবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারও ভাড়ারে ভোট জুটেছে ১, কেউবা ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮…….। একেবারে অংকের নামতা! মোটের ওপর কয়েকশো নির্দল প্রার্থী ১০০-র নীচে ভোট পেয়েছেন এবারের কলকাতা পুরভোটে। কলকাতা পুরসভায় শয়ে শয়ে নির্দল প্রার্থীর লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাকি পুরসভায় নির্দলপ্রার্থীরা কতটা উৎসাহিত হয়! সেটাই এখন দেখার।

কলকাতায় তিন নির্দল প্রার্থীর জয়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁদের যোগ নিয়ে রাজনৈতিক মহল তোলপাড় হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী আপাতত তাঁদের দলে নিতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কলকাতা পুরনির্বাচনে শয়ে শয়ে নির্দল প্রার্থীদের ভোটে কী দশা হয়েছে তা দেখে মোটেই বিস্মিত নয় অভিজ্ঞ মহল। বরং এর পিছনে বৃহত্তর রাজনৈতিক কৌশলই দেখছে তাঁরা। তবে অতীত রাজনীতির কৌশলকেও হার মানিয়েছে এবারে নির্দলদের অংশগ্রহণ। নির্দলদের বৃহত্তম অংশ যে জয় পেতে বা ন্যুনতম ভোটের জন্য প্রার্থী হননি তা তাঁদের ভোটপ্রাপ্তিতে স্পষ্ট। আগামিতে রাজ্যের শতাধিক পুরভোটেও এই ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ৪০৬ জন প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। তাঁরা যে জামানত ফেরত পাওয়ার আশা করেননি তা ফলাফলেই স্পষ্ট। কোনও কোনও নির্দলের ভোটপ্রাপ্তিতে নানা প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। ১ নম্বর থেকে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড, বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই হাজির ছিলেন উদীয়মান সূর্য থেকে জোড়া পাতারা। এক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ থেকে দলপ্রেমী নির্দলের সংখ্যাই যে বেশি ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নির্দলদের একটা বড় অংশ জয় বা লড়াইয়ের জন্য যে দাঁড়াননি তা তাদের ভোটপ্রাপ্তি দেখে পরিস্কার। তবে এদের এজেন্টরা বরাবরই বুথে অতিসক্রিয় থাকেন।

কয়েকটা ওয়ার্ডের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা যাক-
৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন নির্দল ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন মলয় মুখোপাধ্যায় ৮৭টি, সব থেকে কম ভোট পেয়েছেন অভিজিৎ বহেরা ৭টি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দলের সংখ্যা ছিল ৬ জন। সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন দু’জন ১১, সর্বনিম্ন ভোট প্রাপ্তি ২। বাকিদের ভোটপ্রাপ্তি ৫, ৫, ৭।

ওয়ার্ড নম্বর ৩৯। এখানে ১২ জন নির্দল ছিলেন। তাঁদের ভোট প্রাপ্তি দেখে নেওয়া যাক। সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন সেলিম আফরোজ ৫৭টি। সর্বনিম্ন ভোট পেয়েছেন বিশাল গুপ্তা ১টি। তাছাড়া বাকি নির্দলদের ভোট প্রাপ্তি ৩, ৪, ৫, ৬, ৬, ৭, ৯, ১৫, ২২, ৫১। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন নির্দল ১০-এর নীচে ভোট পেয়েছেন। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে জোহার ইকবাল ভোট পেয়েছেন ১টি। বাকি নির্দলদের ভোট প্রাপ্তি ৩, ৭, ৭, ১১, ১৮টি। একমাত্র ৬৫, ১২০, ১৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও নির্দল প্রার্থী ছিল না।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জনৈক নির্দল প্রার্থী জানিয়েছিলেন, ২৩টি বুথেই ২৩জন এজেন্ট রয়েছেন। কিন্তু ওই প্রার্থী সক্রিয় ছিলেন স্বীকৃতি রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ডে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, একজন নির্দল প্রার্থীকে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও কী ভোট দেননি? মাত্র ১টি ভোটেই আটকে গিয়েছেন! এই পরিস্থিতিই হয়তো দেখা যাবে বাকি পৌরসভা নির্বাচনেও।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Politics news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Indipendent candidates results in kmc election 2021