নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে মিছিল করা বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্টজনদের বেনজির ভাষায় আক্রমণ করলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। রবিবার বসিরহাটে বিজেপির অভিনন্দন যাত্রায় এসে 'কলকাতার' বুদ্ধিজীবীদের 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুকুর' বলে উল্লেখ করেন বিজেপির এই সাংসদ।
অভিনন্দন যাত্রা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সৌমিত্র খাঁ বলেন, "যে বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের বুদ্ধিজীবী মনে করেন অথচ কামদুনির মতো ঘটনার বেলায় চুপ থাকেন বা পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে চুপ থাকেন, তেহট্টে বোমাবর্ষণের সময়ে চুপ থাকেন, তাঁরা তৃণমূলের কুকুর ছাড়া কিচ্ছু না। যেমন বলা হতো ‘তেজোর কুকুর’, যেমন সেটা দেশব্যাপী নয় বিশ্বব্যাপী জানত। তেমন মমতা ব্যানার্জীর কুত্তা এই বুদ্ধিজীবীরা যারা সিএএ-র বিরোধিতা করছেন। তাঁরা কি জানেন না বিল-এ এটার সম্বন্ধে কি লেখা আছে? তাঁরা জেনেও ন্যাকামি করছেন। তাই তাঁদের মমতা ব্যানার্জীর কুত্তা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। তাঁরা ন্যাকাজীবী। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের কুকুর।"
এমনকি দিলীপ ঘোষের "শয়তান" মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সৌমিত্র বলেন, "সভাপতি তো অনেক ভাল কথা বলেছেন। আমি বলব ওনাদের রাস্তায় ছেড়ে দিন। পিছনে মিডিয়া না রেখে। দেখব কতোজন চেনে। তাঁদের ক'টা বই পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পড়েছেন? স্বামীজি, নেতাজীকে সিপিআইএম জায়গা দেয়নি। যাদবপুর থেকে ক'টা বুদ্ধিজীবী উঠে এসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ হবেন এটা মেনে নেওয়া হবে না।"
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইন ‘অপ্রয়োজনীয়’, জানালেন শেখ হাসিনা
ইদানিং এমন কুকথাকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক তরজায় মুখর হয়েছেন সব পক্ষই। সৌমিত্রের সুরেই বুদ্ধিজীবীদের কটুক্তি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বারাসাতের সভা থেকে দিলীপের বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গের প্রায় এক কোটি মানুষ নরেন্দ্র মোদী সরকার দরিদ্র মানুষের জন্য যে খাবার পাঠিয়েছেন তা নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বলেছি যে আমরা তাঁদের বাংলায় থাকতে দেব না। এদেরকে যারা সমর্থন করেরেন তাঁরা দেশবিরোধী, হিন্দুবিরোধী। তাঁদেরকে আমরা এখান থেকে পাঠিয়ে দেব। এই কাজ করার জন্য মানুষ আমাদের ৩০৩টি আসনে জিতিয়ে এনেছেন।"
আরও পড়ুন: ‘দিলীপ ঘোষকে খাঁচায় ভরে রাখা হবে’
সৌমিত্র-দিলীপের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কটাক্ষের সুরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন," বিজেপির মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে যে কে কত নোংরা ভাষায় কথা বলতে পারে তা নিয়ে। এগুলি বলে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের নীচুস্তরে নামাচ্ছে। এ জাতীয় কথা যত বেশি বলে, তত ভাল। মানুষ সব দেখছে। তাঁরা যদি এই কাজ চালিয়ে যায় তবে পরের বার মানুষই তাঁদের ভোট দেবে না। দিলীপ ঘোষকে পুনরায় বিজেপি সভাপতি নির্বাচিত করার পরে নোংরা ভাষার ব্যবহার আরও বেড়েছে। ”
Read the story in English