হেলিকপ্টার চেয়েও পাননি। প্রশাসনিক কারণে তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে সরকার জানিয়েছিল। সরকারের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপরই নাম করে তাঁকে 'বিজেপির মুখপাত্র' বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার, সড়ক পথে মালদা যাওয়ার পথে জগদীপ ধনকড় বলেন, 'সব কথার উত্তর দিতে নেই। এগুলি উপেক্ষা করার মতো বিষয়।' উদাহরণ হিসাবে তিনি ক্রিকেটের নো-বলের প্রসঙ্গে তুলে ধরেন।
শুক্রবার সড়ক পথেই তাই মালদার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। দীর্ঘ পথ যাওয়ার মাঝে বর্ধমান সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নেন তিনি। বলেন, 'প্রয়োজনে হাজার কিলোমিটার পথ সড়ক পথে যেতে দ্বিধা করব না। মুখ্যমন্ত্রী কিছু বললে আমি ২৪ ঘন্টার মধ্যে উত্তর দিয়ে থাকি। কিন্তু, আমার ক্ষেত্রে তা হয় না। মুখ্যমন্ত্রী কিছু বললে আমার কিছু এসে যায় না।'
আরও পড়ুন: ‘অনেকেই বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন’, নাম না করে রাজ্যপালকে তোপ মমতার
বৃহস্পতিবারই রাজ্যপালের নাম না করে তাঁকে বিজেপির প্রতিনিধি বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি সেই নিয়ে মুখ না খুলললেও, এদিন ধনকড় বলেন, 'গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেক পক্ষকেই নিজের কাজ করে যাওয়া উচিত। নিজের মতকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রতিপন্ন করে অন্যের মতকে প্রকাশ করতে না দেওয়া ঠিক নয়। আজ পর্যন্ত রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বলেনি রাজ্যপাল তার অধিকারের সীমা লংঘন করেছেন। যদি এমনকিছু হয় তবে অবশ্যই আমি তা বিবেচনা করবো।'
রাজ্যপালের সিঙ্গুর যাওয়া নিয়ে সরব শাসক শিবির। মন্ত্রী থেকে তৃণমূল নেতা, মুখ খুলেছেন ধনকড়ের বিপক্ষে। জবাবে রাজ্যপাল বলেন, 'সমস্যাটা হচ্ছে কোনও কিছু গোপনে করতে গেলে মানুষের কৌতুহল সে ব্যাপারে আরও বেড়ে যায়। হঠাৎ, কোথাউ গেলে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানা যায়। যেমন হাসপাতাল।' এই সফরেও কী তাঁর আচমকা কোথাউ যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে? রাজ্যপাল বলেন, 'হঠাৎ কোথাও যাওয়ার বিষয় আগে থেকে বলা উচিত নয়।'
আরও পড়ুন: আচমকা সিঙ্গুরের বিডিও অফিসে হাজির রাজ্যপাল ধনকড়
যাদবপুর থেকে শুরু। তারপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের সভায় রাজ্যপাল তথা আচার্যের সঙ্গে কোর্ট সদস্যদের মতভেদ হয়েছিল। রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রের নাম ননিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নিগ্রহকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কোর্ট সভায় এনিয়ে জানতে চাইবো। যাদবপুর সহ নানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাম-ডান সব পড়ুয়া প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। এক্ষেত্রেও তাই করবো।' এদিন রাজ্যপাল শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন করেন ধনকড়। বিভিন্ন কারণে আন্দোলনরত অধ্যাপক-শিক্ষকদের দাবি কেন মানা হচ্ছে না? রাজ্যপাল ঘুরিয়ে রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেন।
তাঁর কথায়, 'বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এখানে রাজ্যপাল, রাজ্য সরকার প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারের মধ্য়েই প্রত্যেকের থাকা উচিত। আচার্য হিসেবে তার কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেটা তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে চান।' রাজ্য আড়াই বছর ধরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় যে ভোট না হওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন; ভোট অবশ্যই হওয়া উচিত।'