‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে বাংলায় অশান্তি অব্যাহত। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের তিন প্রান্তে হিংসার ঘটনা সামনে এল। এদিন নদিয়ায় এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। আবার বারুইপুরেও আরেক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি বলতে রাজি না হওয়ায় এক সংখ্যালঘু নাবালককে মারধরের অভিযোগও উঠেছে পুরুলিয়ায়। তিনটি ঘটনা ঘিরেই তুঙ্গে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর।
নদিয়া
নদিয়ার নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জে বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গত বুধবার এলাকার একটি ক্লাবের সামনে কৃষ্ণ দেবনাথ নামে এক বিজেপি কর্মীকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাঁকে শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরে কলকাতার এনআরএসে আনা হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বিজেপির অভিযোগ, ‘‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে দিতে আসছিলেন তিনি। আর তাই পিটিয়ে খুন করা হয়েছে’’। এ ঘটনার প্রতিবাদে মৃতদেহ আগলে রেখে রাস্তা অবরোধে শামিল হন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তবে বিজেপির এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই ঘটনায় শাসকদলের তরফে প্রতিক্রিয়া, ‘‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। মত্ত অবস্থায় মা-বোনদের টোটো আটকে বিশৃঙ্খলা করেছিল ও (কৃষ্ণ)’’। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের তরফে ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় বেদম মার, অভিযোগ এবার ক্যানিং লোকালে!
বারুইপুর
বারুইপুরের রানাবেলিয়ায় ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেওয়ায় বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক শিবির।
পুরুলিয়া
‘জয় শ্রীরাম’ বলতে রাজি না হওয়ায় পুরুলিয়ার নিতুরিয়ায় ১১ বছরের নাবালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। নাবালকের অভিযোগ, রাস্তায় ৩ যুবক তার পথ আটকে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে জোর করে। কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বিজেপির। তবে এ ক্ষেত্রে আবার অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা সম্পাদক কমলাকান্ত হাঁসদা বলেন, ‘‘দলকে কালিমালিপ্ত করতে এটা তৃণমূলের চক্রান্ত’’। অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক’’। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে মারের অভিযোগ
উল্লেখ্য, ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি ঘিরে এর আগেও বাংলায় মারধরের ঘটনা সামনে এসেছে। খাস কলকাতাতেই লোকাল ট্রেন থেকে একর মাদ্রাসা শিক্ষককে মারধর করে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিছুদিন আগে, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সিঙ্গারদহ গ্রামে ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় বিজেপিকর্মীরা তাদের পাঁচজন জনের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। যদিও বিজেপি এই ঘটনাটি অস্বীকার করেছে। এদিকে, শুক্রবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এ ইস্যুতে বলেন, “ওই শব্দ ঠিক কোন জায়গায় পড়ে জানি না। তবে বর্তমান সময়ে এর ব্যবহার দেখে মনে হয় লোককে প্রহার করতে গেলেই এই শব্দ ব্যবহার করতে হচ্ছে।”