স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসি প্রত্যাহার না করলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে কলকাতায় প্রবেশের জন্য বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই দেওয়া হবে না বলে জানান গ্রন্থাগার মন্ত্রী ও জমিয়াত-উলেমা-ই-হিন্দের রাজ্য সভাপতি। রবিবার চড়া সুরে তিনি বলেন, 'প্রয়োজনে আমরা বিমানবন্দরের বাইরে পা ফেলতে দেব না অমিত শাহকে। নয়া নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার না হলে এক লক্ষ মানুষ বিমান বন্দর গিয়ে তাঁকে আটকে দেবে।'
আরও পড়ুন: ‘এনআরসি, সিএএ নিয়ে মুসলমানদের ভুল বোঝাচ্ছে আরবান নকশাল-কংগ্রেস’
রবিবার রানী রাসমণি অ্যাভিনিউতে সিএএ ও এনআরসি বিরোদী সভা করে জমিয়াত-উলেমা-ই-হিন্দ। সেখানেই প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সভায় মন্ত্রী বলেন, 'নাগরিকত্ব আইন ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি। যা সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করবে। জমিয়াত এই আইনের চরম বিরোধী।' কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সিদ্দিককুল্লা বলেন, 'বিজেপি একের পর এক জনবিরোধী নীতি, আইন মানুষের উপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে। তারা কোনও আলোচনায় বিশ্বাস করে না। ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার আলোচনা করতেই রাজি নয়। তাই যতক্ষণ না সিএএ প্রত্যাহার হয় ততক্ষণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তার বিরোধিতা চলবে।'
সিএএ, এনআরসির প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। বাংলাতেও প্রতিবাদ হয়। সেই আন্দোলন ঘিরে অবশ্য হিংসায় ছড়িয়ে পড়ছিল। সভা থেকে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেন সিদ্দিকুলাল চৌধুরী। তাঁর কথায়, 'আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। তবে, তা হবে শান্তিপূর্ণ পথেই। হিন্দু-মুসলমান একযোগে বাংলায় সিএএ-এর প্রতিবাদ আন্দোলন করবে।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছেন রাজ্যে সিএএ, এনআরসি লাগু হবে না। এর প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি। পাঁচ দিন নিজে পথে নেমে পদযাত্রা ও সভা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদ করায় মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য স্ববিরোধী, মানুষই বিচার করবে কে ঠিক আর কে ভুল: মমতা
অন্যদিকে, রবিবার হাওয়ার পাঁচলা ও শিবপুরে সিএএ বিরোধী মিছিল করে বামেরা। শিবপুরের মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মহম্মদ সেলিম। পাঁচলায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর নেতত্বে মিছিল হয়। মহঃ সেলিম বলেন, 'বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে আইন করলে তা মানা হবে না। নাগরিক সমাজ, সাধারণ মানুষ ও বামেরা তার চরম বিরোধিতা করবে। আন্দোলন বন্ধের নামে ওরা পুলিশি জুলুম, ইন্টারনেট বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ঢুকিয়ে অত্যাচার করছে। কিন্তু, মানুষ একজোট হয়েছে। এরা ভয় পেয়েছে।'
এরই মাঝে, সিএএ-এর পক্ষে কলকাতা, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, উত্তর দিনাজপুরে অভিনন্দন ব়্য়ালি করে বিজেপি। আজ কলকাতায় দলের কার্ষকরী সবাপতি জে পি নাড্ডার নেতৃত্বে সিএএ-এর প্রচারে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল রয়েছে গেরুয়া দলের।
Read the full story in English