'ধর্ষকদের সর্বসমক্ষে এনে গণপিটুনি দেওয়া উচিত।' হায়দরাবাদ ধর্ষণের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন সমাজবাদি পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন। গত বুধবার শামসাবাদের টোল প্লাজার কাছে এক পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। সাংসদের কেউ কেউ দাবি তোলেন ধর্ষণে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়া বা খোজা করে দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: সারা দেশে এনআরসি ২০২৪ এর মধ্যে, ঘোষণা অমিত শাহের
জয়া বচ্চন আবেগপ্রবণ হয়ে রাজ্যসভায় বলেন, 'ধর্ষকদের মানুষের মাঝখানে এখানে গণপিটুনি দেওয়া উচিত।' সরকারের উদ্দেশ্যে তাঁর দাবি, 'আগে কতবার এই ধরনের অপরাধের জন্য বলতে উঠেছি। আমি মনে করি এ বার সময় এসেছে। নির্ভয়া হোক বা কাঠুয়া কিংবা তেলঙ্গানা—মানুষ জানতে চায়, ঘটনার বিচার দিতে সরকার কী করছে? এবার তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে হবে। বার বার একই জায়গায় লজ্জাজনক ঘটনা ঘটছে। কেন সুরক্ষার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন না? অনেক দেশ রয়েছে যেখানে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে মানুষ নিজেরাই অপরাধীদের শাস্তি দেয়। এক্ষেত্রেও ধর্ষকদের মানুষের মাঝখানে এনে ছেড়ে দেওয়া উচিত ও গণপিটুনি দিতে হবে।'
ডিএমকে সাংসদ পি উইলসনের পরামর্শ ধর্ষকদের খোজা করে দেওয়া উচিত। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে দোষীর সব সম্পত্তি বিক্রি করে খোজাকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত। দেশে যতজন এই ধরণের অপরাধে দোষী তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা উচিত।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু মহিলাদের উপর নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, 'এই নক্কারজনক অপরাধ বন্ধের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রশাসনিক দক্ষতা ও মানসিকতায় বদল ঘটানোর চেষ্টা করতে হবে। তারপরই চরম শাস্তির দিকে এগনো উচিত। 'রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, 'কোনও সরকার বা রাজনীতিবিদই চায় না এই ধরণের ঘটনা ঘটুক।' দেশে এই ধরণের অপরাধ বাড়ায় নিজের চিন্তা ব্যক্ত করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
আরও পড়ুন: সমালোচনা করায় বিজেপির রোষে শিল্পপতি বাজাজ
এদিন লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সরকার ও বিরোধী সব পক্ষের সাংসদরাই এই ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন আনতে সরকার প্রস্তুতবলে জানানো হয়। রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, 'মহিলাদের উপর নির্যতন ও প্রতিরোধে কড়া আইন আনতে সরকার আলোচনায় রাজি।' হায়দরাবাদের ঘটনার সমালোচনা করে রাজনাথ বলেন, 'দোষীদের কড়া শাস্তি হবে।'
বুধবার রাতে তেলঙ্গানার শামসাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় তোলপাড় হচ্ছে গোটা দেশ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিরাপত্তার গাফিলতির জন্য বহিষ্কার করা হয় তিন পুলিশ কর্মীকে। এতেই অসন্তোষ কমছে না। দেশের নানা প্রান্তে চলছে বিক্ষোভ। তেলেঙ্গার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে করা হয়েছে।
Read the full story in English