নীতিশ কুমারের হস্তক্ষেপে আপাতত জেডিইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে না দলের সহ-সভাপতি প্রশান্ত কিশোরের। শনিবার নীতিশের সঙ্গে বৈঠক হয় প্রশান্তের। সেখানেই এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন জেডিইউ প্রধান। বৈঠকে শেষে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, নীতিশ কুমার দেশজুড়ে এনআরসি লাগুর বিরোধী।
জেডিইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলেছেন, 'সংসদে ক্যাব পাসে সমহযোগিতা করেছে দল। কিন্তু, সিদ্ধান্ত হয়েছে এআরসি-র বিরোধিতা করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত দলের তরফে জানানো হবে।' উল্লেখ্য, জেডিইউ-ই এনডিএর প্রথম শরিক দল যারা এনআরসি-র বিরোধিতা করল।
WATCH: JD(U) vice president Prashant Kishor says Nitish Kumar is against nationwide National Register of Citizens exercise. "CAB along with NRC is dangerous," says Kishor
READ: https://t.co/xJzgMY88xe pic.twitter.com/QmkJ2NCvPW
— The Indian Express (@IndianExpress) December 15, 2019
এর আগে নাগরিক সংশোধনী বিলে দলের নেতারা সমর্থন জানানোয় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি বলেন, গাঁধীর আদর্শে বিশ্বাসী দলের নেতাদের সিদ্ধান্তে তিনি হতাশ। লোকসভা ও রাজ্যসভায় ক্যাবকে সমর্থন করেছে জেডিইউ। তারপরই নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়ে টুইট করেছিলেন কিশোর। টুইটারে তিনি লেখেন, 'যে নাগরিকত্ব বিল ধর্মের নিরিখে মানুষের অধিকার বিচার করে, জেডিউ-কে তাতে সমর্থন জানাতে দেখে আমি হতাশ। দলের সংবিধানের প্রথম পাতাতেই যেখানে তিন বার ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটির উল্লেখ রয়েছে, দলের নেতারা যেখানে গাঁধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত, এই সিদ্ধান্ত সেখানে বেমানান।' ভোট কৌশুলী জানান, ক্যাবের মাধ্যমে এনআরসি লাগু সংবিধান বিরোধী কাজ হবে।
আরও পড়ুন: পিকের পরিবর্তন? নীতীশকে ছেড়ে কি এবার মমতার সঙ্গেই ভোটগুরু?
এরপরই দলের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের চাপানউতোর শুরু হয়। ক্যাব সমর্থনের বিষয়টি ‘পুনর্বিবেচনা’করে দেখার জন্য নীতীশ কুমারের কাছে আর্জি জানান দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র পবন কে ভার্মা। এ প্রসঙ্গে টুইটারে পবন কে ভার্মা লিখেন, 'রাজ্যসভায় ক্যাব সমর্থনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার জন্য নীতীশজিকে আর্জি জানাচ্ছি। এই বিল অসাংবিধানিক, বিভেদ তৈরি করবে। দেশের ঐক্য ও সম্প্রীতির পরিপন্থী এই বিল'।
We are told that #CAB is bill to grant citizenship and not to take it from anyone. But the truth is together with #NRC, it could turn into a lethal combo in the hands of Government to systematically discriminate and even prosecute people based on religion.#NotGivingUp
— Prashant Kishor (@PrashantKishor) December 12, 2019
ড্যামেজ কন্ট্রোলে এরপরই শনিবার নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে বৈঠক হয় ডেডিইউ-তে। সূত্রের খবর, দলের সিদ্ধান্তে বিপক্ষে মুখ খোলায় প্রশান্তের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় দলের রাজ্যসভার সাংসদ আরসিপি সিংয়ের। কিশোরকে পদত্যাগের কথা বলেন তিনি। এরপরই হস্তক্ষেপ করেন জেডিইউ প্রধান। দলে থেকে প্রশান্তকে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। এরপরই নাকি নিজের অনড় মনোভাব থেকে সরে আসেন প্রশান্ত। কে সি ত্যাগী বলেন, 'ক্যাবের মাধ্যমে বহু মানুষ নাগরিকত্ব পাবেন। তাই ওই বিল সমর্থন করেছে জেডিইউ। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত সবাই মেনে চলবেন।' নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে বৈষম্যমূলক বলে মানতে রাজি নয় বিহারের শাসক দল। কিন্তু, এর মাধ্যমে এনআরসি লাগু হলে তা সঠিক হবে না বলে মনে করে জেডিইউ।
নাগরিকত্ব আইন-এনআরসি নিয়ে আপাতত দলীয় বিবাদ মিটিয়েছে জেডিইউ। কিন্তু, এনআরসি ইস্যুতে শরিক বিজেপির সঙ্গে নীতিশের দলের অবস্থানগত পার্থক্য স্পষ্ট হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অবশ্য বিশেষ কিছু বলতে না চেয়ে কার্যত দায় এড়ানোয় চেষ্টা করলেন বিহারের বিজেপি সভাপতি ডঃ সঞ্জয় জয়সওয়াল।
Read the full story in English