ভাটপাড়ায় এত বোমাবাজি করেও হারবে অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিং। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ১৯ তারিখ ভাটপাড়ায় উপনির্বাচনের দিন থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত কাঁকিনাড়া এলাকা যে অশান্তি হয়েছে তার পিছনে অর্জুন সিংয়ের ছেলেরাই রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয়। অন্যদিকে, ভাটপাড়ায় বোমাবাজির ঘটনায় মৃত্যু নিয়েও চাপানউতোর চলছে শাসক-বিরোধী শিবিরে। বিজেপির অর্জুন সিংয়ের দাবি, বোমা বানাতে তৃণমূলের ৪ কর্মী মারা গিয়েছে। যদিও জ্যোতিপ্রিয়র পাল্টা দাবি, একজন বিজেপি কর্মী মারা গিয়েছে এবং অর্জুনের ছেলেরাই বোমাবাজি করেছে।
ভাটপাড়ায় অশান্তি প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘অর্জুন সিংয়ের দলবল গত কয়েকদিন ধরে বোমা-গুলির ফোয়ারা চালিয়েছে। চোরের মায়ের বড় গলা এখন! চূড়ান্ত অসভ্যতা করেছে। মদনকে ভাল করে নির্বাচনও করতে দেয়নি। এলাকায় তাণ্ডব করেছে। তবুও ওঁর ছেলে (অর্জুন-পুত্র পবন সিং) হারবে’’। এ প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় আরও বলেন, ‘‘বোমাবাজিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের লোক নয়, সে বিজেপির। আমরা একটাও বোমা মারিনি। ওরা তো মনে হয় ৫ হাজার বোমা ফাটিয়েছে’’।
আরও পড়ুন: আগাম জামিনের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অর্জুন সিং
এদিকে, ভাটপাড়ার ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, ‘‘আমরা বোমা মেরেছি নাকি! তৃণমূলের লোকেরা বোমা বানাতে গিয়ে মারা গিয়েছে। ৪ জন মারা গিয়েছে’’। এদিকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ভাটপাড়া অভিযান প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘মমতাদির আসা উচিত’’। এ প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘অভিযান তো করবই, নির্বাচনের ফল বেরোক তারপর’’।
প্রসঙ্গত, রবিবার উপনির্বাচনের পর থেকেই উত্তপ্ত ভাটপাড়া। সোমবারের পর মঙ্গলবারও রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কাঁকিনাড়া। এলাকায় বোমাবাজি চলে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে কাঁকিনাড়া স্টেশনে রেল অবরোধ চলে। ২৯নং রেলগেট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা নৈহাটি লোকাল লক্ষ্য করে বোমা, ইট ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে। এর ফলে বেশ কয়েকজন যাত্রী জখম হন বলে খবর। এরপর ওই দিন দুপুর ১২টা ৪ মিনিট নাগাদ এই অবরোধ উঠে যায়। এর আগে গত রবিবার কাঁকিনাড়ার কাটাপুকুর এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি চলে। দফায় দফায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, সে সময় ওই এলাকায় যাচ্ছিলেন উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মদন মিত্র। এরপর তাঁকে ঘিরেই বোমাবাজি চলে বলে দাবি ঘাসফুল শিবিরের। এ ঘটনার পরই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ এবং পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালানো হয়। এলাকা জুড়ে জারি করা হয় কার্ফু। এ ঘটনার পর কাঁকিনাড়ায় অধুনা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও বাঁধে অর্জুন সিংয়ের। সেদিনের উত্তাপের রেশ বজায় থেকে পরের দু'দিনও। ধফায় দফায় অবরোধে উত্তাল হয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার এই জনপদ।