তৃণমূল থকে বিজেপিতে যাওয়ার পরই মমতার দলের ধুকপুকানি বাড়িয়েছেন একদা ঘাসফুলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ মুকুল রায়। লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে মমতার সেই একদা বিশ্বস্ত সৈনিকের ‘বড় ভূমিকা’ রয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। ফলে রাজনীতির ময়দানে এহেন সমীকরণ বদলের পর প্রত্যাশিতভাবেই তৃণমূল নেতৃত্বের নিশানায় রয়েছেন বর্তমানে বিজেপির মুকুল। প্রায়শই মুকুল-তৃণমূল বাগযুদ্ধে সরগরম হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি। এবার মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন তৃণমূলে একদা তাঁরই সতীর্থ তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ‘‘মুকুল রায় যাওয়ার পরই বিজেপিতে দুষ্কৃতী, লম্পটরা ঢুকেছে। ও কী জিনিস জানি আমরা’’, এ ভাষাতেই দলের একদা 'প্রধান সেনাপতি'কে একহাত নিলেন জ্যোতিপ্রিয়।
আরও পড়ুন: মমতা বিজেপির সমর্থন চেয়েছেন, বিস্ফোরক মন্তব্য মুকুলের
ঠিক কী বলেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক?
বিজেপি কর্মীর মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগে শুক্রবার তারকেশ্বর থেকে গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক রাজেন্দ্র সাহা। ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত রাজেন্দ্র, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই দাবি করেছে তৃণমূল। এদিকে, বিজেপির এ ঘটনায় তৃণমূলের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘ধর্ষণ করলেও ষড়যন্ত্র! ষড়যন্ত্র কাকে বলে, আর সত্যের প্রকাশ কাকে বলে, তাহলে বিজেপি সেটা বুঝিয়ে দিক। বিজেপির লোকেরা ধর্ষণ করলে, সেটা ষড়যন্ত্র। আর তৃণমূল কিছু করলে সেটা দলীয় কোন্দল হয়! এসব গল্প শেষ। মানুষের কাছে বিজেপির মুখোশ খুলে গেছে’’। এরপরই মুকুল রায়কে নিশানা করে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘মুকুল রায়রা বিজেপিতে যাওয়ার পরই যত ক্রিমিনামল, বদমায়েশ, লম্পট, সব জনতা পার্টিতে ঢুকেছে। কিছুদিনের মধ্যে রসাতলে যাবে ওই দলটা। বাংলা থেকে তালেগোলে উঠে যাবে। মুকুল রায় কী জিনিস জানি আমরা। সেজন্য আমাদের দল থেকে ওকে বিতাড়িত করা হয়েছিল’’। প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল মুকুল রায়ের। এরপরই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় মুকুল রায়ের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সারদা-নারদা তদন্তে সিবিআই তলব এড়াতেই মুকুল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: মুকুলকে উচিত শিক্ষা দিতে প্রস্তুত তৃণমূল
উল্লেখ্য, শুক্রবার তারকেশ্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র সাহাকে। গত ৬ জুলাই হাড়োয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন তিনি। বারাসতের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক রাজেন্দ্রের বিরুদ্ধে।