তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে হলে সুদ সমেত কাটমানির টাকা ফেরত দিতে হবে, ক’দিন আগে এ বার্তাই দিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপের সুরেই এবার কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বললেন, কাটমানিতে অভিযুক্তদের দলে নেওয়া হবে না। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির উত্থানের পর থেকেই দলবদলের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল থেকে বহু নেতা-কর্মীই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। দলবদলের তালিকায় অন্যতম নাম বীরভূমের লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম। ‘খুন-সন্ত্রাসে’ অভিযুক্ত মণিরুলকে দলে নেওয়ার পরই বিজেপিতে অসন্তোষ তৈরি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি দলের একাংশেই ক্ষোভ তৈরি হয়। এদিকে, কাটমানি ইস্যুতে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় ‘নজিরবিহীন’ বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলে ‘অন্যায়’ করেছেন যাঁরা, সেইসব নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যাতে অস্বস্তিতে না পড়তে হয় দলকে, সে কারণেই বঙ্গ বিজেপির এমন অবস্থান বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: মুকুলদার সঙ্গে যাওয়ার হলে চলে যা, ‘উদ্ধত’ সব্যসাচীকে বার্তা ববির
ঠিক কী বলেছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়?
রবিবার বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘বিজেপি দলটা অন্যরকম। বহু তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী, সাংসদরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরা দলে যোগ দিতে চান। কিন্তু আমরা একটা ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলতে চাই, যাঁরা কাটমানি কেলেঙ্কারিতে জড়িত, তাঁদের আমরা দলে নেব না’’। রবিবার দলের সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে এ বার্তাই দেন বিজয়বর্গীয়। বিজয়বর্গীয়ের সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাও বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলর রেপ্লিকা হব না। যে কোনও ধরনের আর্থিক কেলঙ্কারিতে জড়িতদের দলে নেওয়া হবে না। বাংলার মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। আমাদের সেই মতো কাজ করতে হবে’’।
আরও পড়ুন: কাটমানি নিয়ে বিজেপি আমার বক্তব্য বিকৃত করেছে: মমতা
বিজেপি সূত্রে খবর, দলে নতুন কাউকে যোগদান করানোর সময় ‘সচেতন’ হতে বঙ্গ বিজেপিকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বিজেপিতে যাঁরা যোগ দেবেন, তাঁদের সম্পর্কে ভাল করে জেনেই দলে নেওয়ার নির্দেশ শাহ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দলে কাদের নেওয়া হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ইতিমধ্যেই স্ক্রিনিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও সুব্রত চট্টোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, রবিবারের বৈঠকে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে নয়া টার্গেট তৈরি করে দিলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এক কোটি সদস্যসংখ্যার টার্গেট দেওয়া হয়েছে দিলীপ ঘোষদের। এ প্রসঙ্গে বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘৩০০টিরও বেশি আসন জিতে বিজেপির ক্ষমতায় ফেরার অন্যতম কারণ হল, দেশজুড়ে আমাদের দলের সদস্যসংখ্যা ১০ কোটি। সুতরাং, আমরা যদি এ রাজ্যে সরকার গড়তে চাই, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে ১ কোটি সদস্যসংখ্যা থাকা উচিত’’।
Read the full story in English