গড়িয়া শ্মশানে বেওয়ারিশ লাশ পোড়ানো এবং নদিয়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতা বিতর্ক নিয়ে ফের তৃণমূল-রাজ্যপাল বিরোধ চরমে উঠল। এই দুই বিতর্ক নিয়ে টুইটারে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের টুইট যুদ্ধের মাঝেই এবার রাজ্যপালকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বলেন, "রাজ্য যা চলছে তা নিয়ে রাজ্য সরকার, পুলিশ প্রত্যেকেই তদারকি করছেন। রাজ্যপাল যা জিজ্ঞেস করছেন তাঁর উত্তরও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই ইস্যুকে নিয়ে উনি রাজনীতি করছেন। সবাইকে ডেকে ডেকে পাঠাচ্ছেন। উনি বরং থানায় গিয়ে দারোগার কাজ করুন। ওখানে গিয়ে ইনভেস্টিগেশন করুন। এসব তো রাজ্যপালের কাজ নয়। নির্বাচন আসছে বলে উনি এটাকে নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে তৈরি করতে পারেন না। উনি বিজেপির দালাল। উনি অমিত শাহের দালাল। ওনার রাজভবনে থাকা উচিত নয়, বিজেপির অফিসে গিয়ে টি-বয়ের কাজ করা উচিত। উনি ভারতবর্ষের রাজ্যপাল পদের লজ্জা।"
আরও পড়ুন, ‘গড়িয়ার শ্মশানে মৃতদেহগুলি করোনা রোগীরই, কেউ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়েছে’, বিস্ফোরক দিলীপ
প্রসঙ্গত, মহুয়া মৈত্রের একটি টুইটকে কেন্দ্র করেই টুইট যুদ্ধের সূচনা হয়। কৃষ্ণনগরের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে মহুয়ার টুইটকে হাতিয়ার করে টুইটারে রাজ্যপাল বলেন, “মহুয়া মৈত্র তাঁর নিজের সরকারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ধারাল এবং ঘাতক তির ছুঁড়েছেন। যা আমাদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দুর্নীতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে কাটমানি প্রসঙ্গ আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে। আপাদমস্তক চুরি-দুর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েতের আসল ছবি প্রকাশ্যে এনে নিজেই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন মহুয়া। এখন আবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুগ্রহ পেতে চাইছেন। আমাকে আক্রমণ কি সেজন্যই? এমন অসহায় অবস্থায় আপনি একা নন, আপনার মতো যোগ্য নেতা-নেত্রীদের বন্দিদশা দেখে অবাক হই।”
মহুয়া মৈত্র @MahuaMoitra তাঁর নিজের সরকারের বিরুদ্ধে যে ধারালো তীরগুলি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছুঁড়েছিলেন, সেগুলি ঘাতক ছিল। যা আমাদের পঞ্চায়েতের পুকুর চুরি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে কাট মানি'র কথা আবার মনে করিয়েছে। যা সর্বত্র বিরাজমান @MamataOfficial (1/2) https://t.co/mL71ogZN5m
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 13, 2020
জগদীপ-মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরব হয়ে মহুয়া পাল্টা লেখেন, "রাজ্যসরকার যখন করোনা, আমফান এবং পরিযায়ী সমস্যা নিয়ে মসৃণভাবে কাজ করছেন তখন রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে আক্রমণ করছেন। মনে রাখা দরকার পচা আপেল গাছ থেকে পড়ে বেশিদূর যেতে পারে না।" মহুয়া মৈত্র এও বলেন, "এই প্রথম কোনও রাজ্যপালকে দেখলাম যার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা এমনভাবে প্রকাশ্য এল। এটা খুবই ধিক্কারজনক, লজ্জাজনক। গতকাল দেখলাম একজন রাজ্যপাল বিজেপির ফেক নিউজ পর্যন্ত টুইট করছেন। সেই কারণেই আমি বলেছি উনি গর্ভনরের পদে বসে রাজনীতি ঠিক মতো করতে পারছেন না। তাই উনি বরং রাজস্থানে গিয়ে নির্বাচনে লড়াই করুন।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন