ফেসবুক পোস্টের পর এবার সটান কুণাল ঘোষের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কী মুকুল রায়ের পর পদ্ম ছেড়ে জোড়া-ফুলে আসার পথ মসৃণ হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর? শনিবাসরীও সন্ধ্যায় এই জল্পনা চরমে ওঠে। কিন্তু, তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক বা রাজীব- দু'জনেই জানিয়েছেন এটা আসলে 'সৌজন্য সাক্ষাৎ'। এমনকী এই সাক্ষতের নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ খোঁজার চেষ্টাও উচিত নয় বলে মত তাঁদের। তবে, দলের রাজ্য সম্পাদকের নিষেধ উড়িয়ে এই সাক্ষাৎ নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর গলায় হুঁশিয়ারির সুর!
কী বলেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়?
মুকুলের পর এবার কী তৃণমূলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়? কুণাল-রাজীব সাক্ষাৎ ঘিরে এই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'উত্তর কলকাতায় এক আত্মীয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে দেখতে আসেন রাজীব। তারপর আমাকে ফোন করেন রাজীব। জানতে চায় আমি বাড়ি আছি কি না। তারপর দেখা করতে আসেন। রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।' একই কথা বলেন রাজীবও। প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, 'দীর্ঘদিনের সম্পর্ক কুণালদার সঙ্গে। বড় দাদার মতো আমার। আমি ছোট ভাই হিসাবে এসেছিলাম দেখতে। রাজনীতি নিয়ে কোনও কথাই হয়নি।'
এ দিন অবশ্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়াই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা। গাড়ির উইন্ড স্ক্রিনেও ছিল মা-মাটি-মানুষের উত্তরীয়। ফলে রাজীবের জোড়া-ফুলে ফেরার জল্পনা আরও গাঢ় হয়।
আরও পড়ুন- মুকুলের পর তৃণমূলে রাজীব? জল্পনা বাড়িয়ে কুণালের বাড়িতে বিজেপি নেতা
এপ্রসঙ্গেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ আক্রমণাত্মক। তিনি বলেছেন, 'গত এক মাস রাজীবকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মুকুল রায়ের তৃণমূলে আসার পরই রাজীবকে খুঁজে পাওয়া গেল। তারপর পরদিনই আবার কুণালের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল রাজীবের। ওঁরা বলছেন এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। আমার প্রশ্ন কুণাল আর রাজীবই কী শুধু বুদ্ধিমান? বাকি আমরা সব গরু-ছাগল? কিছুই বুঝি না?'
আরও পড়ুন- Mukul Roy Chanakya: বাংলার রাজনীতির ‘চাণক্য’ মুকুল রায়, সত্যি কী তাই?
এখানেই শেষ নয়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ বলেছেন, 'রাজীবের ভ্যালু ইজ জিরো, এটা প্রমাণ করে দিয়েছি। এবার ওকে নিলে ভাল হবে না কি খারপ হবে সেটা দলনেত্রী ও উচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন। আমি শুধু বলবো, মমতা ব্যানার্জীকে রাজীব যেসব বাজে কথা বলেছিলো তার সব ভিডিও আমার কাছে রয়েছে।' অর্থাৎ, দলবদলু প্রাক্তন মন্ত্রীকে দলে ফেরানোর কথা উঠতেই রীতিমত হুঁশিয়ারির সুর কল্যাণের গলায়।
দলবদলুদের একে একে ফের তৃণমূলে ফিরতে কাতর। কেউ টুইট করেছেন, কেউবা আবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে চিঠি দিয়েছেন। নেত্রীর মুকুলের ঘরওয়াপসির দিন জানিয়েছেন কাদের দলে ফেরানো হবে-কাদের নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন- একদা 'গদ্দার-বেইমান'দের তৃণমূলে ফিরে আসা ঘিরে জোড়া-ফুলের অন্দরে মতান্তর রয়েছে। শনিবার কুণাল-রাজীব 'সৌজন্য' সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে তা একেবারে স্পষ্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন