লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটক কংগ্রেস শিবিরে যেন ঘোর সংকট। গত কয়েকদিন ধরেই ঘোড়া কেনাবেচার জল্পনায় উথালপাতাল দক্ষিণের সে রাজ্য। কংগ্রেস বিধায়কদের ‘টোপ’ দিয়ে ঘোড়া কেনাবেচার ছক কষছে বিজেপি, এমন অভিযোগ তুলেই সরব হয়েছেন সিদ্দারামাইয়ারা। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে ৪ বিধায়কের অনুপস্থিতি ঘোড়া কেনাবেচার জল্পনাকে আরও উসকে দিল। কোনও কারণ ছাড়াই বৈঠকে হাজির হননি দুই বিধায়ক। জরুরি কাজে ব্যস্ত বলে ‘অজুহাত’ দেখিয়ে অন্য দুই বিধায়কও গরহাজির ছিলেন সেদিনের বৈঠকে। ৭৯ জন বিধায়কের মধ্যে বৈঠকে হাজির হওয়া ৭৫ জন বিধায়কদের আগলে রাখতে উঠেপড়ে লাগলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করতে পারে, এই আশঙ্কাতেই ওই ৭৫ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরুর বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি রিসর্টে রেখেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। ঈগলটন রিসর্টে রাখা হয়েছে ওই বিধায়কদের। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাজ্যসভা ভোটের ঠিক আগে ওই রিসর্টেই গুজরাতের ৪৪ জন কংগ্রেস বিধায়ককে রাখা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘আমাদের কোনও বিধায়কই দল ছাড়বেন না। কয়েকদিনের জন্য সকল বিধায়ককে আমাদের সঙ্গেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি সারতে হবে। বিজেপি আমাদের উপর যেভাবে হানা দিয়েছে, তা প্রতিহত করতে হবে।’’
আরও পড়ুন, ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কায় বৈঠকে বসছে কর্নাটক কংগ্রেস
রমেশ জার্কিহোলি ও মহেশ কুমতাহল্লি নামের দুই বিধায়ক কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকের নোটিসের কোনও জবাব দেননি। উল্লেখ্য, গতমাসেই রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছিল রমেশকে। ৬ জন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কের মধ্যে ৪ জনকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। বৈঠকে যোগ দিতে না পারার কথা চিঠি মারফৎ জানিয়েছেন বিধায়ক উমেশ যাদব। আদালতে হাজিরা দিতে হবে, তাই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন বিধায়ক বি নাগেন্দ্র।
রমেশ ও মহেশের বৈঠকে যোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘কোনও কারণ ছাড়াই ওঁরা আসেননি। আমরা ওঁদের নোটিস পাঠিয়ে ব্যাখ্যা চাইব। ওঁদের বক্তব্য পেলে তা হাইকমান্ডকে জানাব।’’ এদিকে, কার্যত কটাক্ষের সুরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বি এস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, ‘‘বৈঠকে কংগ্রেস বিধায়কদের অনুপস্থিতি ও জোটসঙ্গীদের মধ্যে মতপার্থক্যই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আগামী দিনে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হবে।’’
বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তুলে সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘আমাদের বিধায়করা সকলেই সঙ্গে আছেন। আমাদের দল অটুট রয়েছে। বিজেপি আমাদের বিধায়কদের কোটি টাকার টোপ দিচ্ছে। শিবালি, হেব্বার ও অন্য বিধায়কদের এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কাউকে আবার মন্ত্রীত্বেরও টোপ দেওয়া হচ্ছে।’’ যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়াবাহিনী।
উল্লেখ্য, কর্নাটকে সরকারে জেডিএস-কংগ্রেস জোট। কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ৮০ জন বিধায়ক, জেডিএসের হাতে রয়েছে ৩৭ জন বিধায়ক। ২২৪ আসনের বিধানসভায় ১০৪ জন বিধায়ক রয়েছে বিজেপির হাতে। তাছাড়া রয়েছেন ২ নির্দল বিধায়ক ও বসপার এক বিধায়ক।
Read the full story in English