Advertisment

‘মোদী সরকার বলেছিল সিএএ-এনআরসি-এনপিআর পরষ্পর যুক্ত...আর এখন বলছে নয়’

‘‘আমরা খুশি যে বহু রাজ্যই আমাদের মতো পদক্ষেপ করেছে...সিএএ, এনপিআর, এনআরসি বিক্ষোভের সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
pinarayi vijayan, পিনারাই বিজয়ন, নরেন্দ্র মোদী, মোদি, narendra modi, caa, সিএএ, এনআরসি, nrc, pinarayi vijayan interview, পিনারাই বিজয়নের সাক্ষাৎকার, কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর ইন্টারভিউ, pinarayi vijayan express interview, pinarayi মোদী, সিএএ, এনআরসি, এনপিআর, vijayan on caa, kerala on caa, india news, indian express bangla

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

সিএএ বিরোধিতায় প্রথম নজিরবিহীন পদক্ষেপ করেছে তাঁর সরকার। সিএএ বিক্ষোভের আবহে এ ইস্যুতে ফের মুখ খুললেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সিএএ, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে যেমন কথা বললেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই নিশানা করলেন মোদী সরকারকে।

Advertisment

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সিএএ বিক্ষোভ ঘিরে অরাজকতা চলছে, কী বলবেন?

সিএএ ও এনআরসি বিক্ষোভের আঁচ যে প্রধানমন্ত্রী টের পেয়েছেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে। দেশের একটা বড় অংশ সিএএ-র বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। ধর্ম, রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষ প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। যে কোনও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিবাদীদের পাশে থাকে। এমনকী, কেরালা-সহ কয়েকটি রাজ্যও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও পদক্ষেপ দেখলাম না। এর বদলে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সহকর্মীরা বিক্ষোভ নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমার মনে হয়, কেরালাকে দেখে বোঝা উচিত প্রধানমন্ত্রীর, যেখানে ধর্ম, রাজনীতির বেড়াজাল টপকে সব মানুষ একত্রিত হয়ে সংবিধান বিরোধী প্রস্তাবে সরব হয়েছে...ভারত সরকারের বোঝা উচিত যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বড় অংশের পড়ুয়ারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করছেন।জরুরি অবস্থার কথা মনে করে দেখা উচিত প্রধানমন্ত্রীর, সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোই ছিল বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র...কেন্দ্রের শাসকদলের একটা প্রবৃত্তি রয়েছে, ওরা সবকিছুকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে, ধর্মীয় মেরুকরণ করতে চায়। আমরা সকলে দেখেছি, দিল্লি ভোটের প্রচারে কী করেছে ওরা। যে দল দেশ চালায়, তাদের এমন আচরণ করা ঠিক নয়।

আরও পড়ুন: কী এই ১৩১ নং অনুচ্ছেদ, যার বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালতে গেছে কেরালা?

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যাঁরা এনপিআরের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন। আপনার প্রতিক্রিয়া?

সিএএ নিয়ে আমরা প্রথম থেকেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। কোনও সিদ্ধান্ত যদি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবাবেগের পক্ষে বিপজ্জনক হয়, তাহলে একটা দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে সে ব্যাপারে সরব হওয়ার অধিকার রয়েছে আমাদের। বহুবার সরকার বলেছে যে এনপিআর, সিএএ ও এনআরসি প্রক্রিয়া একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, এখন এগুলোকে আলাদা করে দেখানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। শাসকদলের উদ্দেশ্য খুবই পরিষ্কার। এসব করে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চলেছে ওরা। আমরা আন্তরিকভাবে চাই দেশের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলুক মোদী সরকার। দেশভাগের চেষ্টা না করে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ এই স্লোগানকেই আঁকড়ে থাকুক।

আরও পড়ুন: বিরল! মোদীর বক্তব্যের শব্দ বাদ পড়ল রাজ্যসভায়

এনপিআর না করার সিদ্ধান্ত কি আইনি সমর্থনযোগ্য?

দেখুন, অনেক রাজ্যই এ নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। কেন্দ্রের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। আমরাই প্রথম রাজ্য, যারা এই বিভাজনের অ্যাজেন্ডার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলাম। আমরা খুশি যে বহু রাজ্যই আমাদের মতো পদক্ষেপ করেছে...সিএএ, এনপিআর, এনআরসি বিক্ষোভের সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই।

সিএএ ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত যদি কেন্দ্রের পক্ষেই হয়, তাহলে কেরালার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে?

যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের বিষয় এটি, তাই কোনও মন্তব্য করব না। তবে কেরালাবাসী এর বিরোধিতায় একত্রিত হয়েছেন। যখন সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস হয় বিধানসভায়, তখন একমাত্র বিজেপি বিধায়কও বিরোধিতা করেননি।

জনগণনার প্রক্রিয়ায় কি আধিকারিকদের সুরক্ষা দেবে রাজ্য?

আমরা আগেই এ নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি যে জনগণনা প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সবকিছু বন্দোবস্ত করব।

আরও পড়ুন: সিএএ নিয়ে কোন আইনের বলে সুপ্রিম কোর্টে গেল কেরালা?

‘চরমপন্থী দল’ নিয়ে আপনার বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন প্রধানমন্ত্রী...

কেরালা বিধানসভায় আমার বক্তব্যকে রাজ্যসভায় ভুল ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমি এটাই বলেছিলাম যে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে দেশে মেরুকরণের যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে একজোট গোটা কেরালা। দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার্থে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কীভাবে করতে হয় তা দেখিয়েছে কেরালা। এও বলেছিলাম যে, এসডিপিআইয়ের মতো সংগঠনদের সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম, যারা সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালায়...একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এটা আমার কর্তব্য।

কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে এই প্রতিবাদ করে সিপিএম রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে, কী বলবেন?

কেরালায় কংগ্রেসের নিজস্ব ইস্যু রয়েছে। শুরুতে আমাদের সঙ্গেই ছিল ওরা। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মডেল বানাতে পেরেছিলাম সেজন্য...আমার মনে হয়, দেশের স্বার্থে সব ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সংগঠনকে একসঙ্গে হাত মেলানো দরকার...আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে, এটা ভোটের বিষয় নয়।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
national news
Advertisment