Former Kolkata Mayor Sovan Chatterjee likely to join BJP Today: বিজেপিতে যোগদান ঘিরে চরম নাটক। বিজেপি দফতরে শোভন-বৈশাখীর পর এলেন তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। বিজেপি দফতরে বসে শোভন-বৈশাখী। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে রয়েছেন দেবশ্রীও। শোভন-বৈশাখীর পাশাপাশি বিজেপিতে কি যোগ দিচ্ছেন দেবশ্রী রায়ও? তবে আজই শোভনের সঙ্গে একমঞ্চে বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন না দেবশ্রী। সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে বিরাট ভাঙন! মমতাকে ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন শোভন-বৈশাখী
Delhi: Former Mayor of Kolkata & TMC MLA, Sovan Chatterjee with BJP leader Mukul Roy at BJP headquarters. pic.twitter.com/oEhLVF2FSJ
— ANI (@ANI) August 14, 2019
মঙ্গলবার বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর তারপরই কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি উড়ে যান কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক। তাহলে কি বিজেপিতে যোগ দিতেই দিল্লি পাড়ি শোভনের? তুমুল জল্পনা বঙ্গ রাজনীতিতে। সম্ভবত আজই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন প্রাক্তন দমকলমন্ত্রী। তবে কি শোভনের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও? পাশাপাশি শোভনের সঙ্গে রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূলের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তও বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জোর চর্চা চলছে বাংলা রাজনীতির অলিন্দে। যদি শেষ পর্যন্ত এই জল্পনা সত্যি হয়, তাহলে মুকুল রায়ের পর আজই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে বড় জার্সি বদল। যদিও মাঝে রাজনৈতিক গুরুত্বের নিরিখে ‘বড় যোগদান’ ছিলেন অর্জুন সিং।
আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা
প্রসঙ্গত, শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে। মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল এই মমতা ঘনিষ্ঠের। তখন থেকেই শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। অন্যদিকে, সব্যসাচীর সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছয় কয়েকদিন আগে। সব্যসাচী-মুকুল ঘনিষ্ঠতা নিয়েও জোর চর্চা চলে রাজ্য রাজনীতিতে।
সম্প্রতি, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিতে যোগদানের হাল্কা আভাস দিয়েছিলেন শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বলেছিলেন, ‘‘ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে কোন পথে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’’। এর আগে সেই অর্থে বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন শোভন। সেভাবে কখনই প্রকাশ্যে কোনও ইঙ্গিতও করেননি। এর আগে গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে শোভনের ফ্ল্যাটে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি যে তৃণমূলে ফিরবেন না, সেদিনের বৈঠকে পার্থকে শোভন জানিয়ে দেন বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছিল। এই বৈঠকের পরই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফেরার কোনও প্রশ্নই নেই’’। অতীতে বৈশাখী বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের কথা হয়েছে এবং তিনি গেরুয়া শিবিরকে অচ্ছুৎ মনে করেন না।
আরও পড়ুন: শোভন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন, স্বীকার মুকুলের
শোভনের বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায় সম্প্রতি বলেছিলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় দলে (তৃণমূলে) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। শোভনের সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কথা হয়েছে বলে জানি। তবে শোভন কী করবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার’’।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফেরার প্রশ্নই নেই, ভাল লোকেরাই দল ছাড়ছে: বৈশাখী
প্রসঙ্গত, গত বছরে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক বিবাদ ও মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। এরপর থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে কার্যত নিজেকে গুটিয়ে নেন শোভন। কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপরই জল্পনা ছড়ায় তবে কি তিনি তৃণমূল ত্যাগ করছেন? যত দিন গড়ায়, ততই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে শোভনের। গত ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের সভাতেও গরহাজির থেকেছেন শোভন। পাশাপাশি মমতার ডাকে দলের বিধায়কদের বৈঠকও এড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পূর্ব এলাকায় তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও গরহাজির থাকেন শোভন। সব মিলিয়ে যেভাবে ধীরে ধীরে তৃণমূল-শোভনের সম্পর্কের ব্যবধান বাড়ছে তাতে মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেতার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনাই জোরালো হচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। শেষ পর্যন্ত পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেন কিনা শোভন, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।