পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবসকে কেন্দ্র করে হুলস্থূল ধর্মতা চত্বর। আইন লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের দায়ে মহামারী আইনে গ্রেফতার করা হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। গান্ধিমূর্তির পাদদেশ থেকে কার্যত টেনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। এর আগে রানি রাসমণি রোডে একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে, বিজেপি নেতা শীলভদ্র দত্তকে। তারই প্রতিবাদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থানে বসেছিলেন শুভেন্দু, দিলীপ দেবশ্রীরা।
টিকা চুরি থেকে নারী নিগ্রহ, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা ও আইন-শৃঙ্খলা অবনতির প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরেই একাধিক কর্মসূচি পাল করছে পদ্ম বাহিনী। আজ ছিল পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস। এ দিন বেড়া ১টা থেকেই রানি রাসমণি রোডে জমায়েত করছিল বিজেপির নেতা, কর্মীরা। মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। ভিড় বাড়তেই বিজেপির কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডাও নজরে আসে। তারপরই সৌমিত্র খাঁ, শীলভদ্র দত্তদের সেথান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন- হাত ছেড়ে জোড়াফুলে, তৃণমূলে যোগ দিলেন সুস্মিতা দেব
এই ঘটনার প্রতিবাদে বেলা পৌনে ২টো নাগাদ মেয়ো রোডে হাজির হন শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ। অবস্থানে বসেন গেরুয়া শিবিরের কর্মীরাও। ফলে মহামারী আইন লঙ্ঘন হচ্ছে এই অভিযোগ আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলে পুলিশ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিজেপির কেউ। এরপরই জোর করে বিজেপির অবস্থান তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের খেলা হবে দিবসে গোল করলেন দিলীপ ঘোষ
শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। সেই সময় মঞ্চে বসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, দেবশ্রী চৌধুরীরা। এক সময় পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরে মঞ্চ থেকেই পুলিশ বিরোধী দলনেতা, রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, 'যারা ত্রিপুরায় গিয়ে বলে গণতন্ত্র নেই। তারা কী করে এখানে এই ধরনের কাজ করছে।' প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর কথায়, 'গোটা বাংলায় গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। এখন ত্রিপুরাতে গিয়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে তৃণমূল।'
পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীদের কোনও কর্মসূচি পান করতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু শাসক দল তৃণমূল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। এই অভিযোগ আগেই তুলেছে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষদের গ্রেফতারির পর আবারও দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, "তৃণমূলের অপশাসন, ভ্যাকসিন দুর্নীতি, নারী সুরক্ষার দাবিতে ধর্মতলায় রানী রাসমণি রোডে "পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস" অবস্থান বিক্ষোভ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে রাজ্য সভাপতি শ্রী দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীমতি দেবশ্রী চৌধুরী সহ একাধিক রাজ্য নেতৃত্ব এবং কর্মী সমর্থককে। বিরোধী দল অবস্থান করলেই গ্রেফতার? শাসক হলে ছাড়!"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন