জয় প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এত বিপুল ব্যবধানে আস্থা ভোটে জয় আসবে তা মনে হয় শিণ্ডেসেনা-বিজেপি জোটও ভাবতে পারেনি। তবে পুরোটাই সংখ্যার জোরে হয়নি। শিণ্ডের ছাতি চওড়া করেছে বিরোধী শিবিরের বহু বিধায়কের অনুপস্থিতি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বন। তিনি-সহ ১১ জন কংগ্রেস বিধায়ক আস্থা ভোটে অংশ নেননি বা নিতে পারেননি। যা অস্বস্তিতে ফেলেছে মহা বিকাশ আঘাড়ি জোটকে। উদ্ধবের সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলেছে তারই দলের শরিক কংগ্রেস।
বিরোধী শিবিরের অনেকেই এই ঘটনাকে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন, বেপরোয়া বলে কটাক্ষ করেছেন। রবিবার যেখানে স্পিকার নির্বাচনের সময় বিরোধী ভোট পড়েছিল ১০৭, সেখানে সোমবার মহা গুরুত্বপূর্ণ আস্থা ভোটের সময় শেষ পর্যন্ত বিরোধী ভোট পড়ে ৯৯টি। এত কম কেন, তা নিয়ে বিরোধী শিবিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, নবনিযুক্ত স্পিকার রাহুল নারওয়েকর সকাল ১১টার মধ্যে আস্থা ভোটের সময় দিয়েছিলেন। আদিত্য ঠাকরে, অশোক চহ্বন-সহ অনেকেই সেই সময়ে বিধানসভা পৌঁছতে পারেননি। এরা ছাড়়াও প্রণতি শিণ্ডে, জিতেশ অন্তপুরকর, বিজয় ওয়াদ্দেতিওয়ার, জিশান সিদ্দিকি, ধীরজ দেশমুখ, কুণাল পাটিল, রাজু আওয়ালে, মোহন হামবার্দে, শিরিশ চৌধুরি এবং মাধবরাও জলগাঁওকর ভোটদান করেননি।
আরও পড়ুন উন্নয়ন আর হিন্দুত্বই নয়া সরকারের লক্ষ্য, স্পষ্ট ঘোষণা শিণ্ডের
এই বিধায়কদের অনুপস্থিতি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছে যে, তাঁরা শিণ্ডে শিবিরের সংস্পর্শে রয়েছেন। মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, "বিধায়কদের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ সত্যিই আশ্চর্যের। ওঁদের বেপরোয়া মনোভাবের পরিচয়।"
মহারাষ্ট্রের এআইসিসি ইনচার্জ এইচ কে পাটিল বলেছেন, "আট জন বিধায়ক দেরিতে এসেছেন এবং তাঁরা লবিতে অপেক্ষা করছিলেন। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই। দেরিতে আসায় তাঁদের আস্থা ভোটে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। তাঁরা বৃষ্টি আর যানজটের জন্য দেরিতে পৌঁছন। কিছু সময় অনভিপ্রেত ঘটনা হয়ে যায়।"
আরও পড়ুন উলটপুরাণ! ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী, পালাবদলে অজিত এখন বিরোধী দলনেতা
অশোক চহ্বনের সাফাই, "আমি দু-তিন মিনিট দেরিতে এসেছিলাম। কিন্তু বিধানসভার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে কোনও চক্রান্ত নেই। আমরা যানজটে ফেঁসে গিয়েছিলাম।" আরেক কংগ্রেস নেতার দাবি, "এটার কারণ প্রস্তুতির অভাব। আমাদের হুইপ জারি আর বৈঠক হয়নি। যার ফলে অনেক সদস্যই বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। এর পিছনে কোনও রণনীতি ছিল না। কেউ সমন্বয় বা নজরদারি করেননি। যার ফলে কে এসেছে কে আসেননি, দেখা হয়নি।"
আরও পড়ুন ‘মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছে ED’, হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন খোদ ফড়নবিশ
এদিকে, উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়়ণবিশ যে সমস্ত বিধায়ক গরহাজির ছিলেন তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন কারণ তাঁদের সহায়তায় জয়ের ব্যবধান বেড়েছে শাসক শিবিরের।