Advertisment

'কোনও অসন্তোষ নেই', এনসিপি বৈঠকে হাজির হয়ে বললেন অজিত

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুশারে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যেই আস্থা ভোট হবে মহারাষ্ট্র বিধানসভায়। এবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পালা শিবসেনা কংগ্রেস ও এনসিপি জোটের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অজিত পাওয়ার

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে শপথ নিচ্ছেন বিধায়করা। এরই মধ্যে সকালে রাজ্যপালের সঙ্গে গিয়ে সস্ত্রীক দেখা করে আসেন মহারাষ্ট্রের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। এদিকে, পোর্টফোলিও নিয়ে আলোচনার জন্য আজই শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্যদিকে বিরোধ ভুলে দলের মূল স্রোতে ফিরে এনসিপির বৈঠকে উপস্থিত হতে দেখা গেল অজিত পাওয়ারকে। তিনি বলেন, 'আমার কারোর প্রতি কোনও এসন্তোষ নেই।'

Advertisment

publive-image রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সস্ত্রীক উদ্ধব ঠাকরের।

মঙ্গলবারই দেশ প্রত্যক্ষ করেছে মহা নাটক 'ক্লাইম্যাক্স'। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুশারে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যেই আস্থা ভোট হবে মহারাষ্ট্র বিধানসভায়। মঙ্গলবার এই রায়ের পরই দেবেন্দ্র ফড়নবীশ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। সাড়ে তিন দিনের বিজেপি সরকারের পতনের সঙ্গেই মহারাষ্ট্র রাজনীতির মহা-নাটকের সাক্ষী হয়েছে গোটা দেশ। এবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পালা শিবসেনা কংগ্রেস ও এনসিপি জোটের। ইতিমধ্যেই ১৬৬ বিধায়ক জোটের পক্ষে রয়েছেন বলে রাজ্যপালকে জানিয়েছে 'মহা বিকাশ আগাড়ি'।

শীর্ষ আদালতের রায় অনুশারে আজ অধিবেশনের প্রথমে শপথ নিচ্ছেন বিধায়করা। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আস্থা ভোট। মঙ্গলবার দুপুরে ইস্তফা দিয়েছেন ফড়নবীশ সরকারের 'জিওনকাঠি' এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। অজিত জোটের পক্ষে বলে আগেই জানিয়েছিলেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। সেই দাবি পোক্ত হয় যখন দেখা যায়, রাতেই এনসিপি প্রধান তথা কাকা শরদ পাওয়ারের বাড়িতে প্রবেশ করছেন দলের বিদ্রোহী নেতা অজিত পাওয়ার। সূত্রের খবর শরদ পাওয়ারের স্ত্রী সম্পর্কে অজিতের কাকিমা ও শরদ কন্যা সুপ্রিয়া সুলের স্বামীর হস্তক্ষেপেই বরফ গলে।

বুধাবার সকালে দাদা অজিতের সঙ্গে দেখা যায় বোন সুপ্রিয়া সুলেকে। বিজেপিকে সমর্থনের পর অবশ্য অজিতকে 'প্রতারক' বলেছিলেন শরদ কন্যা। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় এনসিপির পরিষদীয় দলের নেতা পদ থেকে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বড় পাওয়ার কী ছোট পাওয়ারেরর 'ঘর ওয়াপসি' মেনে নেবেন? ফিরিয়ে দেবেন দলের পরিষদীয় নেতার পদ? জোটের শক্তি পরীক্ষার সঙ্গেই তাই নজরে এনসিপির অন্দরের 'পাওয়ার প্লে'। শপথের পর অবশ্য অজিত বলেন,'আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমি এনসিপিতেই রয়েছি। এই নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।'

এনসিপি বিধায়কদের মধ্যে দাঁড়িয়ে অজিতকে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়। শরদ পাওয়ারের নাতি তথা বিধায়ক রহিত পাওয়ার বলেন, 'অজিত মামা দলে ফিরে আসায় আমরা খুশি। আগামীতে তাঁর নেতৃত্বে দল এগিয়ে যাবে। মহারাষ্ট্রের উন্নয়ের জন্য সরকার কাজ করবে।' আগমী দু'দিনের মধ্যেই তিন দলের মধ্যে সরকারের ক্ষমতা আলোচনার ভিত্তিতে স্থির হয়ে যাব বলে এদিন জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বালাসাহেব থোরাট। তবে, সূত্রের খবর, পোর্টফোলিও নিয়ে আলোচনার জন্য আজই শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

মঙ্গলবার রাতেই শিবসেনাকে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল কোশিয়ারি। শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসি জোটের তরফে সর্বসম্মতিক্রমে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয় সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে। জানা গিয়েছে, সম্ভবত বৃহস্পতিবার শিবাজী পার্কে শপথ নেবেন বালাসাহেব ঠাকরে পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। এই প্রথম ঠাকরে বংশ থেকে কোনও সদস্য রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে বসতে চলেছেন। তবে, আপাতত মহারাষ্ট্র বিধানসভার সদস্য নন তিনি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাঁকে বিধায়ক পদে নির্বাচিত হতে হবে। রাজ্যপাল বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরেকে। উদ্ধব বলেন, 'যাদের সঙ্গে ৩০ বছরের জোট ছিল তারা আমাকে বিশ্বাস করতে পারেনি। অথচ, যাদের বিরুদ্ধে ৩০ বছর লড়েছি তারাই আমার নেতৃত্বদানের উপর আস্থা রাখল। আমি ভাবছি কি হারালাম আর কি পেলাম।' কংগ্রেস সভানেত্রী ও শরদ পাওয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শিবসেনা প্রধান।

আরও পড়ুন: সংক্ষিপ্ততম সময়ের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, তালিকায় আর কে কে দেখে নিন

গত ২৪শে অক্টোবর থেকে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে রাজনীতিক টানাপোড়েন চলে। শনিবার অগচরে অজিত পাওয়ার বিজেপিকে সমর্থন করায় তা নয়া মোড় নেয়। লড়াই গড়ায় আইনি রাস্তায়। রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা ও আস্থা ভোটের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টর দ্বারস্থ হয় আগাড়ি জোট। রবি ও সোমবার শুনানির পর মঙ্গলবার রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়, বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে আস্থা ভোট করতে হবে বিধানসভায়। তার আগে প্রোটেম স্পিকারের কাছে সব বিধায়করার শপথ নেবেন। আস্থা ভোট সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এরপরই প্রথমে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন অজিত পাওয়ার। পরে ইস্তফা দেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। ফলে পতন ঘটে সাড়ে তিন দিনের বিজেপি মন্ত্রিসভার। তোরজোর শুরু হয় লেনা, কম ও এনসিপি জোটের সরকার গঠন প্রক্রিয়ার।

সেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস জোটকে 'অশুভ' আখ্যা দিয়ে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন ফড়নবীশ। কিন্তু, আগাড়ি জোটকে বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে আজ। তাদের দাবি ১৬৬ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। সেই সংখ্যা শেষ পর্যন্ত অটুট থাকে কিনা রাজনৈতিক মহলের লক্ষ্য থাকবে সেদিকেও।

Read the full story in English

mahabharata
Advertisment