মহারাষ্ট্রে জমে উঠেছে রাজ্যসভার লড়াই। বিজেপি শুক্রবারই রাজ্যসভার নির্বাচন থেকে তাদের তৃতীয় প্রার্থীর নাম তুলে নেবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে। এরই জেরে ষষ্ঠ আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি মঞ্চও তৈরি করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাই এড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় ছিল শিবসেনা নেতৃত্বাধীন রাজ্যের ক্ষমতাসীন মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ)।
মহারাষ্ট্র থেকে বিজেপি রাজ্যসভার জন্য তিনজনকে প্রার্থীপদ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, অনিল বন্দে এবং ধনঞ্জয় মাদিককে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অন্যদিকে সেনার দুই প্রার্থী দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত এবং সঞ্জয় পাওয়ার। ক্ষমতাসীন জোটের এনসিপি এবং কংগ্রেসেরও প্রত্যেকের একজন করে প্রার্থী রয়েছে। এনসিপির প্রার্থী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেল এবং কংগ্রেসের প্রার্থী ইমরান প্রতাপগাদি।
আগামী ১০ জুন রাজ্যসভার ভোটের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। এদিকে, এমভিএ-র প্রতিনিধি হিসেবে গতকালই ছঙ্গন ভুজবল, অনিল দেশাই এবং সুনীল কেদাররা বিরোধী দলনেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। বিজেপি যাতে তৃতীয় প্রার্থী হিসেবে মাদিকের নাম তুলে নেয় সেই অনুরোধই জানান তাঁরা। মোটের উপর শিবসেনা নেতৃত্বাধীন এমভিএ এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়ানোর চেষ্টায় ছিল।
আরও পড়ুন- ‘মৃত’ সাক্ষীই হঠাৎ হাজির ভরা কোর্টে, হুলস্থূল-কাণ্ডে শোরগোল
এদিকে, একক বৃহত্তম দল হিসেবে বিজেপির ৩০টি বাড়তি ভোট রয়েছে। এছাড়াও বিজেপির পক্ষে রয়েছে নির্দল ১২ বিধায়কের সমর্থন। সব মিলিয়ে বিজেপির ভোটের সংখ্যা ৪২-এ পৌঁছেছে। উল্টোদিকে শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি-র মিলিত উদ্বৃত্ত ভোটের সংখ্যা মাত্র ৩০। অতএব রাজ্যসভার ভোটে জিততে হলে প্রার্থীকে ৪২টি ভোট পেতেই হবে। সেক্ষেত্রে বিজেপির ধারে-কাছে ঘেঁষারও সুযোগ পাবে না এমভিএ।
তবে দর কষাকষি এখনও চালিয়ে যাচ্ছে মহা বিকাশ আঘাড়ি। যারই অংশ হিসেবে ফড়নবিসের সঙ্গে দেখা করে মহারাষ্ট্রের আসন্ন বিধান পরিষদের নির্বাচনে বিজেপিকে একটি অতিরিক্ত আসন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এমভিএ নেতারা। ২০ জুন মহারাষ্ট্রে বিধান পরিষেদর ১০টি আসনের জন্য নির্বাচন রয়েছে। যদিও বিরোধী দলনেতা ফড়নবিস এমভিএ নেতাদের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। উল্টে রাজ্যের শাসক জোটকেই তাঁদের একজন প্রার্থী তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বিনিময়ে একটি অতিরিক্ত বিধান পরিষদের আসন গ্রহণ করতে বলেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- পিপিই কিট নিয়ে সীমাহীন ‘দুর্নীতি’, পদ্মে কালি জোড়াফুলের
এদিকে, শিবসেনার পক্ষে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সমর্থন ছাড়া অতিরিক্ত কাউন্সিলের আসন ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। উভয় পক্ষই তাদের ঘোষিত অবস্থান থেকে সরে না আসায় ষষ্ঠ আসনের নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা ফড়নবিস বলেছেন, ''আমাদের তিন প্রার্থীরই জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রশ্নই নেই। বিজেপি একটি সর্বভারতীয় দল। প্রতিটি রাজ্যসভার আসন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।''