অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে কং-এনসিপির সঙ্গে বৈঠক শিবসেনার
মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের ইঙ্গিত দিলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। তাঁর ঘোষণা, 'এনসিপি, কংগ্রেস ও শিবসেনা মহারাষ্ট্রে আগামী সরকার গঠন করবে এবং তা পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করবে।'
Advertisment
মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য বুধবারই শরিক শিবসেনাকে দায়ী করেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তার জবাব মুখে না দিয়ে 'বিকল্প সরকার' গঠনের মাধ্যমেই দিতে মরিয়া উদ্ধব ঠাকরেরা। রাজ্যে সরকার গড়ার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে বৃহস্পতিবারই বৈঠক করলেন শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির মাধ্যমে 'বিকল্প' সরকারেরর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা আগেই বলেছিল হাত শিবির। সেই কর্মসূচির রূপরেখা নির্ধারণেই এই বৈঠক হয় মুম্বইতে। এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে শিবসেনার বহু বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। আগামীতে কীভাবে তা বাস্তবতার ভিত্তিতে সমাধান করা যায় তা নিয়ে তিন দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সেনা শিবিরের পরিষদীয় নেতা একনাথ শিন্ডে জানান, 'অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির একটি খসড়া লেখা হয়েছে। তিন দলের নেতাদের সামনে তা পেশ করা হয়েছে এই বৈঠকে।' সূত্রের খবর, শিক্ষায় ৫ শতাংশ মুসলিমদের সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যাতে বিরোধিতা না করা হয় সেই বিষয়ে শিবসেনার থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছে সোনিয়া গান্ধীর দল। উল্লেখ্য, এর আগে কং-এনসিপি জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন শিক্ষায় ৫ শতাংশ মুসলিমদের সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছিল। পরে ক্ষমতায় এসে বিজেপি-সেনা জোট সেই উদ্যোগে জল ঢেলে দেয়।
এছাড়াও, বেকার ভাতা প্রদান, নতুন শিল্পে স্থীনয়দের জন্য সংরক্ষণ নিশ্চিতকরণ, কম্বল কারখানার লোন মুকুব সহ একাধিক বিষয় অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বীর সাভারকরকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি করেছে সেনা শিবির। যা নিয়ে কংগ্রেস-এনসিপি ভিন্ন মত পোষন করে। এই ভিন্নতা নিয়ে আলোচনা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উঠে আসে।
সূত্র মারফত খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর আগামী ১৭ই নভেম্বর সোনিয়া গান্ধী ও শরদ পাওয়ারের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। দিল্লির ওই বৈঠকেই নিশ্চিত হবে কং-এনসিপি জোট মহারাষ্ট্রের সরকার গঠনে উদ্ধব ঠাকরের দলককে সমর্থন করবে কিনা।
বৃহস্পতিবার বৈঠকের ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। 'বিকল্প' সরকার গঠনের পথ ক্রমশ প্রশস্থ হচ্ছে, গেরুয়া শিবিরকে কৌশলে বার্তা দিতেই বৈঠকে উপস্থিত তিন দলসের নেতাদের এহেন পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তকালের বৈঠকে, শিবসেনার তরফে উপস্থিত ছিলেন একনাথ শিন্ডে, সুভাষ দেশাই। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহান ও সুশীল কুমার শিন্ডে, মানিকরাও ঠাকরে প্রতিনিধিত্ব করেন। এনসিপির হয়ে ছিলেন, জয়ন্ত পতিল, ছগন ভূজওয়াল ও রাজ্য সভাপতি নবাব মালিক।
জোট করে মহারাষ্ট্রে বিধানসভায় ভোটে লড়ে বিজেপি শিবসেনা। তারপরই ৫০-৫০ মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রশ্নে বিরোধ বাধে এনডিএ-র দুই শরিকের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় তাদের জোট। বিকল্পের সন্ধান শুরু করে সেনা শিবির। নির্দিষ্ট সময়ে কোন পক্ষই প্রয়োজনীয় বিধায়ক জোগাড় করতে না পারায় রাজ্যে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। এর জন্য একদা শরিক সেনাকেই দায়ী করেন অমিত শাহ।