উত্তর থেকে দক্ষিণ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে ব্যাপক রদবদল ঘটানো হল। একাধিক জেলায় মন্ত্রীদের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিল শাসক দল। এক পদ, এক ব্যক্তি। সম্প্রতি সংগঠন চালাতে এই নীতি কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোড়া-ফুল শিবির। তার জেরেই এদিনের বদল বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সংগঠন মজবুত করতে একই জেলাকে একাধিক সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, কলকাতা, হাওড়া সহ বেশ কয়েকটি জেলাকে সাংগঠনিকস্তরে ভেঙে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানকার সভাপতি পদের দায়িত্ব কাদের দেওয়া হয়েছে তাও ঘোষণা করা হয়েছে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতির পদে ছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই রদবদলে তাঁকে সরানো হয়েছে। জেলা সভাপতি পদের দায়িত্ব দেওয়া হল নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে দুটি সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে। একটি সুন্দরবন, অন্যটি যাদবপুর ডায়মন্ডহারবার। সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্বে যোগরঞ্জন হালদার। যাদবপুর ডায়মন্ডহারবারেরসভাপতি করা হয়েছে শুভাশিস চক্রবর্তীকে।
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর উপস্থিতিতে দিলীপকে বাড়তি গুরুত্ব! চূড়ান্ত কৌশলী মমতা
হুগলিতে শাসক শিবিরে গোষ্ঠী কোন্দলের কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। এই জেলাকে দুটি সাংগঠনিকস্তরে ভাগ করা হয়েছে। একটি হুগলি-শ্রীরামপুর, অন্যটি আরামবাগ। প্রথমটির দায়িত্বে বিধায়ক স্লেহাশিস চক্রবর্তী। আরামবাগের সভাপতি করা হল রমেন্দু সিনহা রায়। এর আগে হুগলির তৃণমূল সভাপতি ছিলেন দিলীপ যাদব। বর্তমানে সাংগঠনিক জেলা ভাগ করা হলেও তাঁকে কোনও দায়িত্বই দেওয়া হল না।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের খেলা হবে দিবসে গোল করলেন দিলীপ ঘোষ
নদিয়া জেলাকে সাংগঠনিকস্তরে উত্তর ও দক্ষিণ- এই দুই ভাগে বিভক্ত করেছে তৃণমূল। উত্তরের দায়িত্বে জয়ন্ত সাহা ও দক্ষিণের সভাপতি রক্তা ঘোষ কর। এই জেলায় আগে তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন মহুয়া মৈত্র।
চারটি সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে হাওড়াকে। এগুলো হল, হাওড়া শহরতলী, হাওড়া গ্রামীণ, হাওড়া সদর ও হাওড়া শহর। হাওড়া জেলা সভাপতি পদ থেকে অরূপ রায় এবং হাওড়া গ্রামীন জেলা সভাপতি পদ থেকে সরলেন পুলক রায়। তৃণমূলের হাওড়া শহরতলীর সভাপতি করা হয়েছে লগনদেও সিংকে। হাওড়া গ্রামীণের সভাপতি বর্তমানে সমীর কুমার পাঁজা। হাওড়া সদরের সভাপতি অরিজিৎ বটব্যাল ও হাওয়া উলুবেড়িয়া শহরের সভাপতি করা হয়েছে অসীত বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
পূর্ব মেদিনীপুরের সভাপতি পদ থেকে সরানো হল মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। এই জেলাকেও সাংগঠনিকস্তরে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। মালদা জেলা সভাপতি পদ মৌসম বেনজির নুরকে সরানো হল। তাঁর জায়গায় এলেন আবদুর রহমান বক্সি। জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি করা হয়েছে মহুয়া গোপকে।
সাংগঠনিকস্তরে কলকাতার দুই জেলা কমিটির সভাপতি বদল করল তৃণমূল। উত্তর কলকাতা তৃণমূল জেলা কমিটির সভাপতি করা হল তাপস রায়কে। ওই পদে ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতা জেলা কমিটির সভাপতি করা হল দেবাশিস কুমারকে।
এই রদবদল প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, "সংগঠনে আরও যাতে নজর দেওয়া যায় তার জন্যই এই পরিবর্তন। সংগঠনের সভাপতি পদে থাকলে দায়িত্ব অনেক। মানুষের সহ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। মন্ত্রী বা সাংসদ পদের কাজ সামলে দলের জেলা সভাপতির কাজ পালন করা বেশ কঠিন। তাই এই রদবদল করা হল।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন