লোকসভা ভোটের আগে আবারও মোদীকে ফের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার হাওড়ার সভায় মমতা বলেছেন, ‘‘ভোটের আগে যাঁরা বলেন, এই করব, সেই করব। জানবেন, ওঁরা কিছু করবেন না। সব ভাঁওতা।’’ এরপরই পুলওয়ামার প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কখনও মিসাইল দেখাচ্ছে, কখনও বোমা দেখাতে হচ্ছে, কখনও বন্দুক দেখাতে হচ্ছে, কখনও জওয়ানদের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করছে, লজ্জাও করে না।’’ মমতা বলেন, ‘‘আমরা সেনার পাশে আছি। একতা, সম্প্রীতির পাশে আছি।’’
এ প্রসঙ্গে মোদীবাহিনীকে নিশানা করে মমতা আরও বলেন, ‘‘যিনিই ওঁদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁকে পাকিস্তানি বলা হচ্ছে। উনি শুধু একাই হিন্দুস্তানি। আমাদের একটাই ধর্ম, তা হল মানবধর্ম। হাতগুলো তো রক্তে রাঙা হয়ে গিয়েছে। মানবিকতা কাকে বলে জানো? সব এখন মানবিক হয়ে গিয়েছে। বড় বড় ভাষণ সব।’’
আরও পড়ুন, গান্ধীজির হত্যাকারীদের কাছ থেকে দেশপ্রেম শিখব না: মমতা
হাওড়ার সভায় এদিন ফের মোদী সরকারকে হঠানোর বার্তা দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একজনকে কিছু দিনের জন্য বোকা বানিয়ে রাখা যায়। কিন্তু চিরদিনের জন্য যায় না। মোদী-অমিত শাহর সাইনবোর্ড উঠিয়ে দেব। ওরা গেলে দেশ বাঁচবে।’’ এরপরই মমতার আক্রমণ, ‘‘মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে, সেই ওষুধ খেয়ে কোনও লাভ হয় না। তেমনই যে সরকারের মেয়াদই শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন এত প্রকল্প ঘোষণা করে কী হবে?’’
মোদীকে কটাক্ষের সুরে মমতা আরও বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর মতো শৌচালয় উদ্বোধনে চলে যাই না। শুধু প্রচার করে বেড়ান। এত প্রচারের কী দরকার? কাজ করবেন না শুধু প্রচার।’’ নমোকে বিঁধে মমতা বলেন, ‘‘সারা ভারতে শ্রেণিবিভাগ করছে। ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের সিন্ডিকেট বানিয়েছে। কখনও এমনটা হয়েছে, যে দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এতটা ভয় পান। যেন গব্বর সিং। একেকটা গব্বর সিং এসেছে সব। ওঁদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতেই হবে।’’
আরও পড়ুন, জগাই-মাধাইয়ের দোষ নয়, আমাদের দোষ: মমতা
মোদী সরকারের আয়ুষ্মান প্রকল্পকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান প্রকল্প, সব মিথ্যে কথা। যখনই বুঝেছি ২ নম্বরি, তখনই সরে এসেছি। স্বাস্থ্যসাথী চালু করেছি। সাড়ে ৭ কোটি মানুষ উপকৃত।’’ এদিন ফের নোট বাতিলের প্রসঙ্গে টেনে মমতা বলেন, ‘‘আমিই প্রথম বলেছিলাম নোট বাতিল খারাপ। নোট বাতিলে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ২ কোটি ছেলেমেয়ে চাকরি হারিয়েছে। ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। আমি যখন বলছি, পুরোটা জেনেই বলছি।’’ এরপরই কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছে। পার্লামেন্টে রেকর্ড রয়েছে।’’
অন্যদিকে, হাওড়ার সভায় রাজ্যের উন্নয়নীমুখ তুলে ধরে মমতা জানান, নবান্নের পিছনেই ৩ একর জায়গায় স্বাস্থ্যভবন গড়া হবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সাড়ে ৭ বছরে ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয় গড়া হয়েছে। আরও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় গড়া হবে। ১৮৬টি কিষাণ মান্ডি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাই প্রথম যারা কৃষকদের খাজনা মকুব করেছে। সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এতকিছু করছি, তাও সমালোচকরা কিছু দেখতে পান না।’’