ফোনে আড়ি পাতাকাণ্ডে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রে নজরদারির সরকার চলছে বলে অভিযোগ তাঁর। পেগাসাসের মাধ্যমে কেন্দ্র বিরোধী নেতা-নেত্রীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে ও দাবি করেছেন মমতা। দেশের গণতন্ত্র বাঁচাতে এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টকেও স্বঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
কী বলেছেন মমতা?
পেগাসাস নজরদারি নিয়ে ভারতজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে। মোদী সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী শিবির। এই প্রেক্ষিতে এদিন ২১শের মঞ্চেও কেন্দ্রকে একহাত নেন তৃণমূল সুপ্রিমো। 'পেগাসাস ডেঞ্জারাস' বলে বক্তব্যের সুর চড়ান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'এটা শুধু ট্যাপ নয়। সবটাই রেকর্ড করে নিচ্ছে। আপনি বাড়িতে কখন ঘুমাচ্ছেন সেটাও ফোনে দেখা যাবে। আপনি কী খাচ্ছেন, সেটাও দেখা যাবে। আপনার ব্রেনটাও স্ক্যান করে নিচ্ছে। আমি কারোর সঙ্গে কথা বলতে পারবো না? স্পাইগিরি চলছে। সব মন্ত্রী, বিরোধী নেতা-নেত্রী, বিচারপতি, সাংবাদিকদের ফোনে পেগাসাস ঢুকে গিয়েছে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করছে না। আমি অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না।'
পেগাসাসের মানেও বাতলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'পেগাসাস কী জানেন? গরিবদের টাকা দেওয়ার পরিবর্তে প্রচুর টাকা খরচ করছেন গোয়েন্দাগিরিতে। স্পাইং, বিটিং, কিলিং অ্যান্ড টকিং টু মাচ ডুয়িং নাথিং।'
হ্যাকারদের থেকে বাঁচতে কী করবেন? এরপরই সেই পথ বাতলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, পেগাসাস থেকে নিজেকে আড়াল করতে তিনি নিজের মোবাইল ফোনের ক্যামারায় প্লাসটার লাগিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'আমি একটা কাজ করেছি দেখাই আপনাদের। দেখুন আমি ক্যামেরাটা পুরো প্লাস্টার করে দিয়েছি। কী করব ফোন রেখে, ক্যামেরার মাধ্যমেও তো আড়ি পাতে। তাই আমি ক্যামেরাটাই প্লাস্টার করে দিয়েছি।'
আরও পড়ুন- ‘খেলা হয়েছে, আবার খেলা হবে, বিরোধিরা ফ্রন্ট গড়ুন’
খবরে প্রকাশ অভিষেক, পিকের ফোনও ট্যাপ হয়েছে। এই ইস্যুতে মমতা চড়া সুরে বলেন, 'দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে বিজেপি। গণতন্ত্রের বদলে গোয়েন্দাগিরি চলছে। সবার কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা হচ্ছে। মনে রাখবেন পেগাসাই নরেন্দ্র মোদীর নাভিশ্বাস।'
পেগাসাস কাণ্ডে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও হুঙ্কার দিয়েছেন মমতা। তবে, তার আগে দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে এই ইস্যুতে স্বঃতপ্রণোদিত মামলা রুজুর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতিদের উদ্দেশ্য করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'বিচারপতিদের ফোনও ট্যাপ হয়েছে। তাই ফোন ট্যাপকাণ্ডে সুপ্রিমকোর্টকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার আবেদন করছি। বিচার ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে বাঁচাতে পারে।'
এর পাল্টা রাজ্যের বিরোদী নেতা বলেছেন, 'আড়ি পাতা ওনার সংস্কৃতি। তৃণমূল সরকার সবসময় ফোন ট্যাপ করে। আমি যখন ছিলাম তখনও করতো। এসব বিজেপি করে না।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন