সিএএ-এনআরসি ইস্যুতে বিজেপিকে চরম হুঙ্কার দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘যদি বেঁচে থাকি তাহলে রাজনৈতিক জামানত বাজেয়াপ্ত করে ছেড়ে দেব’, রানাঘাটের মাটিতে দাঁড়িয়ে এ ভাষাতেই গেরুয়াবাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির বড় উত্থানের পর তৃণমূলের হেরে যাওয়া আসন রানাঘাটে গিয়ে এলাকাবাসীর উদ্দেশে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘বিজেপিকে ভোট দিলেন, কী পেলেন?’ নিজেই এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি ভোট নিল, অধিকার কেড়ে নিল,এনপিআর চাপিয়ে দিল, রেল-ব্যাঙ্ক-বিএসএনএল-এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করে দিল, দেশের সংস্কৃতি ভুলিয়ে দিল’’।
বিজেপিকে নিশানা করে রানাঘাটে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘ বাংলায় এনআরসি, এনপিআর, সিএএ হবে না। নিশ্চিন্তে থাকুন। এসব রাজনৈতিক ফায়দা। রাজনৈতিক জামানত বাজেয়াপ্ত করে ছেড়ে দেব যদি বেঁচে থাকি। দাঙ্গাবাজ, ধান্দাবাজ, গুন্ডাবাজ, যুদ্ধবাজ বিজেপিকে বিশ্বাস করবেন না’’।
আরও পড়ুন: ‘বড়মা নয়, মোদীর ভালবাসা ভোটের জন্য’, তীব্র কটাক্ষ মমতার
এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি নিজেও মাটির ঘরে জন্মেছিলাম। ২ দিনের মাথায় মা আমায় নিয়ে কলকাতায় চলে আসে। মাটির ঘরের গন্ধটা ভালবাসি। বাবা-মায়ের জন্মের শংসাপত্র দিতে না পারলে নাগরিক নয়?’’ এরপরই রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মমতার পরামর্শ, ‘‘কাগজপত্র দেবেন না। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করতে এলে পুরোটা বলবেন না। কিছু জমা রাখতে বললে বলবেন না। বাড়ি গিয়ে আধার কার্ড চাইলে দেবেন না’’।
অন্যদিকে, এনআরসি ইস্যুতে বিজেপিকে নিশানা করে এদিন বনগাঁর সভায় মমতা বলেন, ‘‘এনআরসি করলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে যেতে হবে। বিজেপির কত শক্তি আছে দেখতে চাই। আমার সঙ্গে ধামসা-মাদল, ঢোল, কাঁসর ঘণ্টা শঙ্খ, মা-বোনেরা থাকবে। আমি এখানকার নাগরিক, আমার মা-বাবা নাগরিক এখানকার, তোমরা বলছো, তিনপুরুষের সার্টিফিকেট লাগবে? এনআরসির প্রথম ধাপ এনপিআর। আমার বুকের পাটা আছে, তাই এনপিআর করিনি’’।
আরও পড়ুন: ‘এনপিআরে কোনও নথি লাগবে না’, বড় ঘোষণা মোদী সরকারের
শাহিনবাগের প্রসঙ্গ টেনে মমতা এদিন বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা বলছে, গুলি চালাবে। যেখানে পারছে গুলি চালাচ্ছে। এটা কী হচ্ছে, এটা সরকার! শান্তি বজায় রাখা দরকার। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, গুলি চালাব। কাউকে পছন্দ হল না বলে গুলি চালিয়ে দেব? শাহিনবাগ, পার্কসার্কাসে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে, মেয়েরা বসে আছে। সেখানে গিয়ে গুলি চালাচ্ছে। যা ইচ্ছে তাই করছে’’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন