প্রথমে বলেছিলেন ‘হ্যাঁ’, ২৪ ঘণ্টা পরই সিদ্ধান্ত বদলে জানালেন ‘না’। সাংবিধানিক সৌজন্য মেনেই রাজনীতির আকচাআকচি দূরে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রথমে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পরের দিনই শেষবেলায় দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে হঠাৎই তৃণমূলনেত্রী মত বদলে জানালেন, তিনি মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। বাংলায় রাজনৈতিক হিংসায় ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। নিহতদের পরিজনদের মোদীর শপথে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিজেপির এই সিদ্ধান্তেই বেজায় চটেছেন মমতা। রাজনৈতিক হিংসায় ৫৪ জনের মৃত্যু নিয়ে বিজেপির এই অভিযোগ ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে দাবি করে মমতার বক্তব্য, ওঁদের আমন্ত্রণ করে মোদীরা আসলে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। আর এতেই আপত্তি জানিয়ে মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে না অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতার এহেন সিদ্ধান্ত বদল নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা। তাঁদের বক্তব্য, ২০১১ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যখন শপথ নিয়েছিলেন মমতা, সেসময় উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের নিহতদের পরিজনরা।
আরও পড়ুন: মোদী জি, আমি দুঃখিত, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারছি না: মমতা
এ প্রসঙ্গে একদা মমতা সেনাপতি তথা বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, ‘‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁরা কি মমতার শপথ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না? তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিককে কি আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম না?’’ উল্লেখ্য, ২০০৫-২০০৬ সালে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। সিঙ্গুরে ন্যানোর কারখানা নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। সেসময় বিরোধী নেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনের জোয়ারেই ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম জমানার পতন ঘটিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন মমতা। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ই তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। যে ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি।
The oath-taking ceremony is an august occasion to celebrate democracy, not one that should be devalued by any political party pic.twitter.com/Mznq0xN11Q
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 29, 2019
অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মৃত্যু ও ধর্ষণ নিয়ে উনি (মমতা) যে ধরনের রাজনীতি করেছেন, তা বাংলার কেউই ভুলবেন না। উনি যেভাবে তাপসী মালিকের মৃত্যুকে হাতিয়ার করেছেন, রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যু নিয়ে যা করেছেন...’’। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে গ্রাফিক্স ডিজাইনার রিজওয়ানুর রহমানের রহস্যমৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। যদিও তাঁর মৃত্যু আত্মহত্যা বলে দাবি করা হয়। এক শিল্পপতির মেয়ের সঙ্গে রিজওয়ানুর গোপনে বিয়ে করেন। আর তা নিয়েই পারিবারিক বিবাদ হয়। যা পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ‘ইস্যু’ হয়ে ওঠে।
Read the full story in English