পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি এখন ডানপন্থীমুখী। তার নমুনা হিসেবে গত সপ্তাহেই উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ নিজের বাবা কমল গুহর সম্পর্কে মুখ খুলেছেন। উদয়ন গুহ জানিয়েছেন, তাঁর বাবা ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ও মন্ত্রী। তিনি এবং তাঁর পরবর্তীরাও অবৈধভাবে অনেককে চাকরি দিয়েছেন। উদয়ন নিজে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছেন যে তাঁর বাবা, ‘দলের স্বার্থে দুর্নীতি করেছেন।’ একইসঙ্গে উদয়ন জানিয়েছেন, হয়তো সংখ্যাটা তত বেশি ছিল না। কিন্তু, তারপরও সেটা দুর্নীতিই ছিল। তিনি বলেন, ‘৫ টাকা নিলে দুর্নীতি হয় না। কিন্তু, ৫০ হাজার বা ৫ লক্ষ টাকা নিলে সেটাই দুর্নীতি? এটা এমন হতে পারে না। আমার বাবাও অনেক লোককে চাকরি দিয়েছেন।’
তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছিল। বিশেষ করে চাকরিতে নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। যা সরাসরি মানুষকে আঘাত করেছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেল তাঁর আস্তিন থেকে কার্ড বের করতে। এমন কৌশল কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার ব্যবহার করলেন না।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোট ঘড়ির কাঁটা এখন থেকেই বাজতে শুরু করেছে। আর, তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার মুসলিম জনসমর্থনকে টার্গেট করেছেন। আর, সেই জন্য দুর্নীতির কলঙ্কের বিরুদ্ধে লড়াই করার কৌশল যেমন নিয়েছেন। তেমনই বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্প চালু করারও নীতি নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সতর্কতার কারণ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্য থেকে ১৮টি আসন জিতেছে। আর, তাতে রীতিমতো হতবাক তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, তার আগে রাজ্যে বিজেপির অস্তিত্ব ছিল বিরল ঘটনা।
আরও পড়ুন- ধরনায় ‘ডবল ডিউটি’ মমতার, বিভ্রান্তি কাটালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী
কিন্তু, সেসবও এখন অতীত। এখন আর শুধু বিজেপিই নয়। তৃণমূলের আক্রমণের নিশানায় ফিরেছে সিপিএমও। কারণ, সাম্প্রতিক সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে গোহারান হেরেছেন তৃণমূল প্রার্থী। যে সাগরদিঘিতে এই ঘটনা ঘটেছে, সেটা আবার মুসলিম অধ্যুষিত। যা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে রীতিমতো আশঙ্কার। কারণ, এতে তৃণমূলের মুসলিম ভোটব্যাংকে ধস নামার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। আর, তাই সব ফ্রন্টেই রক্ষণ জোরদার করতে মরিয়া দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।