তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির সভাতে নাম না করে দলের এক সময়ের 'সেকেন্ড-ইন-কমান্ড'-কে হুঁশিয়ারি দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির কাঁধে উঠলেই তিনি যে রেহাই পাবেন না, সেই বার্তাও দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সোমবার তৃণমূলত্যাগীদের উদ্দেশে 'সিবিআইপন্থী', 'ইডিপন্থী', 'গদ্দারপন্থী'র মতো বিশেষণ ব্যবহার করেছেন মমতা। তাঁর দাবি, এরাই তৃণমূল ভাঙতে চাইছে, টাকার লোভ দেখাচ্ছে।
নজরুল মঞ্চে এদিন মমতা বলেন, "সব চোর, সব ডাকাত একজোট হয়েছে। যত সিবিআইপন্থী, ইডিপন্থী। কোথাও ফোন করে বলছে, সিবিআই আসছে, ইডি আসছে, চলে আয়। এবার যেই চলে গিয়েছে, সিবিআইপন্থী, ইডিপন্থী সব একজোট হয়েছে। গদ্দারপন্থীগুলো একজোট হয়েছে। চোরপন্থীগুলো একজোট হয়েছে। যেহেতু আগে একসঙ্গে ছিল, তাই আপনাদের ফোন নম্বর জানে। ফোন করে এখন বলছে, চলে আয়। কত টাকা লাগবে? হরিদাস। টাকাটা আসছে কোথা থেকে, চোরের বাবা?"
তৃণমূলত্যাগীদের শুধু কটাক্ষই নয়, এ দিন রীতিমতো হুঙ্কার ছেড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিঞ্চিত সমঝে দেওয়ার সুরে এদিন মমতা বলেন, "(বিজেপি)একদিন টাকা দেবে, ৩৬৫ দিন টাকা দেবে না। তারপর গুন্ডামি করাবে। বিপদে ফেলে দেবে। তুমি নিজে বাঁচবে তো"! এরপরই হুঙ্কার দিয়ে তিনি বলেন, "আজ বিজেপির কাঁধে উঠে নাচছো ছোট ছেলে, আগামিকাল বাঁচবে তো? ভগবান বাঁচাবে তো। এত সস্তা কিছু নয়। এত বড় বড় কথা, এত বড় বড় বুলি"!
আরও পড়ুন: জগাই-মাধাইয়ের দোষ নয়, আমাদের দোষ: মমতা
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার বিষয়টা যে তিনি মোটেই হাল্কাভাবে নেন নি, তা এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, একদা তাঁরই একান্ত বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকারীকে নাম না করে বিঁধেছেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি, সৌমিত্র খাঁ, শঙ্কুদেব পণ্ডারাও রয়েছেন নিশানায়। এদিনের বক্তব্যে কখনও তিনি মুকুল রায় বা অন্য কারও নাম উল্লেখ করেন নি। কিন্তু, তাঁর বক্তব্য নানাভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে, ক্ষোভের লক্ষ্য আসলে কে। যাঁরা 'তাঁর' সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন, এদিনের বক্তৃতায় তাঁদের কার্যত সমঝে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।