নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের জীবনী সম্প্রচার করা যাবে না, এমনটাই নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। এই নির্দেশ অনুযায়ীই ইতিমধ্যেই আটকে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিক। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জীবন অবলম্বনে নির্মিত ওয়েবসিরিজের স্ট্রিমিং নিয়েও। এই ডামাডোলের মধ্যেই কিছুদিন আগে মুক্তি পায় একটি বাংলা ছবির ট্রেলার যেটিকে পরোক্ষে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বায়োপিক বলেই শোনা গিয়েছে। ২৪ এপ্রিল নিজের অফিসিয়াল টুইটার হ্য়ান্ডল থেকে টুইট করে, ছবির প্রসঙ্গে এই প্রথম মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
ছবির নাম ‘বাঘিনী: বেঙ্গল টাইগ্রেস’। নাম এবং ট্রেলারের দৃশ্য়ায়ন দেখে সোশ্য়াল মিডিয়ায় অনেকেই বলতে শুরু করেন যে এই ছবিটি মুখ্যমন্ত্রীর বায়োপিক। আগামী ৩ মে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। এই অবস্থায় মঙ্গলবার সকালেই ট্রেলারটি ইন্টারনেট থেকে প্রত্য়াহার করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন বলেন, ট্রেলার যাতে অনলাইনে কোথাও দেখা না যায় সেটা নিশ্চিত করতে 'জরুরি পদক্ষেপ' নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ওয়েব থেকে ‘বাঘিনী’-র ট্রেলার তুলে নেওয়ার নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের
এর পরেই নিজের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে ছবি প্রসঙ্গে বিশেষ টুইটটি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর টুইটের বক্তব্যটি এই রকম-- ''এসব কী ভুলভাল কথা ছড়াচ্ছে! কোনও রকম বায়োপিকের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। যদি কয়েকজন তরুণ কিছু গল্প জোগাড় করে নিজেদের মতো করে কিছু বানিয়ে থাকে, তবে সেটা তাদের ব্য়াপার। তার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি নরেন্দ্র মোদী নই। মিথ্যা প্রচারের জন্য় মানহানির মামলা করতে আমাকে বাধ্য করবেন না।''
টুইটের এই ভাষা থেকে স্পষ্ট যে গোটা বিষয়টি নিয়ে অত্য়ন্ত রেগে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 'বাঘিনী'-র ট্রেলার ভাইরাল হওয়া এবং ওই ছবির গল্পকে তাঁর বায়োপিক বলে ইন্টারনেটে শোরগোল পড়ে যাওয়া নিয়েও কোনও কথা বলেননি তিনি। তবে হঠাৎ এত কেন রেগে গেলেন তিনি? সম্ভবত নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশই ভস্মে ঘিয়ের মতো কাজ করেছে। হয়তো নির্বাচনী প্রচারের মধ্য়ে এই ছবির ট্রেলার রিলিজ নিয়ে বেশ বিরক্তই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ আসতেই আর রাগ সংবরণ করতে পারেননি।
তাই রীতিমতো হুমকির মেজাজেই অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে বার্তা দিলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সকলকে হয়তো এটাই বোঝাতে চাইলেন যে তিনি এতদিন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি মানে এই নয় যে কখনও দেবেন না। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মেজাজটি ধরে রাখতে, আবারও মনে করিয়ে দিলেন যে তিনি 'মোদী' নন!