এনআরসি নিয়ে আবারও সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা ফের আশ্বাসের সুরে বললেন, ‘‘এখানে (বাংলায়) এনআরসি করা হবে না। আমি বলছি মানে, রাজ্য সরকারের হয়ে বলছি। আসামে করেছে, কারণ ওখানে বিজেপি সরকার। এখানে আমাদের সরকার। এনআরসি করা হবে না। রাজ্যে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা হবে না’’।
এনআরসির আতঙ্ক গ্রাস করেছে উত্তরবঙ্গকে। ইতিমধ্যেই এনআরসির জেরে দেশছাড়া হওয়ার আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস ‘‘বাংলায় এনআরসি হতে দেব না’’। লোকসভা ভোটের পর এই প্রথম উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তিনি। সেখানেই নিজেকে রাজ্যের 'পাহারদার' বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখানে এনআরসি হতে দেব না। আমি আপনাদের পাহারাদার। একটা মানুষকেও বাংলা থেকে যেতে দেব না।'
গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের ফলাফল শোচনীয়। উত্তরবঙ্গের ৯টি লোকসভা আসনের একটিও পায়নি তৃণমূল। ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া জোড়াফুল শিবির। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধীতায় তাই এনআরসি ইস্যুকেই হাতিয়ার করছেন তৃণমূল নেত্রী। সোমবার তাঁর মন্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সন্ময়কে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে, ক্ষত-বিক্ষত শরীর’
শিলিগুড়িতে ঠিক কি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
'পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হতে দেব না। আমি আপনাদের পাহারাদার। একটা মানুষকেও বাংলা থেকে যেতে দেব না। যারাই এরাজ্য়ে বসবাস করেন তারাই বাংলার বাসিন্দা। যাদের বয়ল ১৮ হয়েছে তাদের এখনই ভোটার তালিকায় নাম নথিভূক্ত করতে হবে। আমরা রাজ্যে কোনও ভেদাভেদ মেনে নেব না। আমি মমতা ব্যানার্জি। আমি যদি বলি শুধু ব্যানার্জি থাকবে আর কেউ থাকবে না! এটা আমি ভাবতেই পারি না। বরং ব্যানার্জি চলে যাক। মানুষ থাকুক। এটাই আমি চাই। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমাদের সরকার আপনাদের পাশে ছিল, আছে, এবং আগামীতেও থাকবে।'
আরও পড়ুন: ‘মমতা হেরে যাবেন বলে ভয় পেয়েছেন’, কটাক্ষ মুকুলের
এনআরসির বিরোধিতা করতে গিয়ে এদিন রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, সুভাষচন্দ্র বসুর নাম নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'যারা দেশে নবজাগরণের ঘটিয়েছেন, যাদের আন্দোলননে দেশ স্বাধীন হয়েছে তাঁরাই আমাদের এদেশে থাকার অধিকার আর্জন করেছেন। তাই কোনও দেশবাসীকে কেন্দ্রীয় সরকার তাড়াতে পারবে না।'
প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রায়ইশই বলে থাকেন দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বার করে দিতে এনআরসি হবে দেশজুড়ে। আসামের পর এবার তাদের লক্ষ্য বাংলা। ইতিমধ্যেই এনআরসির বিরোধীতায় পথে নেমে আন্দোলন করেছে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, বিধানসভা ভোট আর বেশি দেরি নেই। বাংলায় বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূল সুপ্রিমো তাই এনআরসি বিরোধীতাতেই সুর চড়াতে তৎপর।
Read thee full story in English