লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে ভবিষ্যৎ রাজনৈতির লক্ষ্যকে সামনে আনলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন যে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ও অন্যান্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে মিলে তিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিরোধী ফ্রন্ট তৈরি করবেন।
মমতার কথায়, 'আমি, নীতীশ কুমার, হেমন্ত সোরেন এবং আরও অনেকে ২০২৪ সালে একত্রিত হব। সমস্ত বিরোধী দল বিজেপিকে পরাজিত করতে হাত মেলাবে। আমরা সবাই একদিকে থাকব আর বিজেপি অন্যদিকে। বিজেপির ৩০০ আসনের অহংকারই হবে তার পতনের কারণ। ২০২৪ সালে খেলা হবে।'
কলকাতায় এক দলীয় কর্মসূচিতে ভাষণ দেওয়ার সময়, টিএমসি প্রধান দাবি করেন যে অহংকার এবং জনগণের ক্ষোভের জন্যই বিজেপির পতন ঘটবে। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের স্লোগান ছিল 'খেলা হবে'। সেই স্লোগান যে মোটেও ভুল ছিল না, তা প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনে। গেরুয়া শিবির হাজারো চেষ্টা করলেও তাদের পরাজিত করে টানা তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সম্প্রতি গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তারা ঝাড়খণ্ডের অবিজেপি সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। এজন্য ঘোড়া কেনাবেচা করতে উঠেপড়ে লেগেছিল। বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গও তুলে আনেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, 'সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ ঝাড়খণ্ডের শাসকজোটের বিধায়কদের বিপুল পরিমাণ অর্থ-সহ গ্রেফতার করেছে।' এর ফলে ঝাড়খণ্ডের সরকারের পতন রোধ করা সম্ভব হয়েছে বলেই দাবি মমতার।
ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গত জুলাই পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার পাঁচলায় গাড়ি-সহ আটকানো হয়। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা। প্রায় ৪৯ লক্ষ নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছিল ওই গাড়িতে। ধৃত নেতারা দাবি করেছিলেন, তাঁরা রাজ্যে আদিবাসী উৎসবের জন্য শাড়ি কিনতে ওই নগদ অর্থ নিয়ে ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছিলেন।
ঝাড়খণ্ডের শাসকজোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেস। সেরাজ্যের জেএমএম-নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি অংশের দাবি, বিজেপি তাদের বিধায়কদের প্রত্যেককে ১০ কোটি টাকা এবং মন্ত্রী পদের প্রস্তাব দিয়ে কেনার চেষ্টা করছে। আর, হেমন্ত সোরেন সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন- মুদ্রাস্ফীতির দায় একা কেন্দ্রের নয়, রাজ্যগুলোর জন্যও জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, অভিযোগ সীতারামনের
সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতা বলেন, 'বিজেপি মনে করে যে তারা আমাদের সিবিআই এবং ইডিকে দিয়ে হুমকি দিতে পারে। তারা যত বেশি এই ধরনের কৌশল অনুসরণ করবে, ততই তারা পরের বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের কাছাকাছি চলে যাবে।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিভিন্ন মামলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পার্থ চ্যাটার্জি ও অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পরে তাঁর এবং তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচার চালিয়েছে বিরোধীরা। বিশেষ করে বিজেপি সেই প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছে বলেই অভিযোগ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
Read full story in English