ফের ‘মৌন’মোহন তাঁর ‘মৌনতা’ সমালোচনা নিয়ে সরব হলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে তিনি কখনই ভয় পাননি, একথাই বললেন মনমোহন সিং। ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’ নামের তাঁর একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে মঙ্গলবার দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে কখনও ভয় পাইনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই কার্যত নিশানা করে মনমোহন এমন মন্তব্য করেছেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
এদিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অনেকে বলেন, আমি মৌন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। আমি এটাই বলতে চাই , আমি তেমন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না, যিনি সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে ভয় পান। আমি রোজ সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করতাম। এমনকি বিদেশ সফর চলাকালীনও তা করতাম। বিমানের মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করেছি কিংবা অবতরণের পর। এরকম বহু সাংবাদিক বৈঠকের কথা উল্লেখ করা রয়েছে বইয়ে।’’
আরও পড়ুন, ফের মোদিকে আক্রমণ মনমোহন সিংয়ের
কীভাবে তিনি ‘দুর্ঘটনাচক্রে’ অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন মনমোহন। তিনি বলেছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমহা রাও অর্থমন্ত্রী হিসেবে অর্থনীতিবিদ আইজি প্যাটেলকে ভেবেছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি প্যাটেল। তারপর ওই প্রস্তাব আসে আমার কাছে। মনমোহনের মন্তব্য, ‘‘অনেকে বলেন ‘দুর্ঘটনাচক্রে আমি প্রধানমন্ত্রী’ হয়েছিলাম, কিন্তু আসলে আমি ‘দুর্ঘটনাচক্রে অর্থমন্ত্রী’ হয়েছিলাম।’’
অন্যদিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরকারের সংঘাত নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আরবিআই ও কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পর্ক ‘স্বামী-স্ত্রী’র মতো বলে এদিন মন্তব্য করেছেন মনমোহন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বশাসন ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘আরবিআইয়ের স্বশাসন ও স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেওয়া দরকার। একইসঙ্গে আমি বলব, সরকার ও আরবিআইয়ের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো। সেখানে দু’জনের মতপার্থক্য থাকবে, আকচাআকচি থাকবে, কিন্তু তারপরও যাতে দুই প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে।’’
উল্লেখ্য, আরবিআইয়ের সঞ্চিত টাকার একাংশ সরকারকে দেওয়া নিয়ে বিরোধ বাঁধে। কয়েকদিন আগে হঠাৎ পদত্যাগ করেন আরবিআইয়ের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল। যে ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় দেশে। সেই প্রেক্ষাপটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
Read the full story in English