Advertisment

মোদীকে আমার কড়া কথা বলা উচিৎ হয় নি: মনমোহন

মনমোহন সিং ২০১৪ সালে বলেছিলেন যে মোদী দেশের সর্বনাশ ডেকে আনবেন। এদিন ইন্দোরে তিনি বলেন, "আমি যে কড়া ভাষা ব্যবহার করেছিলাম, তা আমার করা উচিৎ হয় নি।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং গতকাল ইন্দোরে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে "কড়া কথা" বলা তাঁর অনুচিত হয়েছিল। ডঃ সিং সেসময় বলেছিলেন যে মোদী দেশের সর্বনাশ ডেকে আনবেন। এদিন ইন্দোরে তিনি বলেন, "আমি যে কড়া ভাষা ব্যবহার করেছিলাম, তা আমার করা উচিৎ হয় নি। এবার জনসাধারণ সিদ্ধান্ত নেবেন।"

Advertisment

এই বলেই স্পষ্ট ভাষায় আবার মোদীকে আক্রমণ করে ডঃ সিং বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের অপব্যবহার করছেন। "রাজনৈতিক বিরোধীদের কটূক্তি করা একজন প্রধানমন্ত্রীকে শোভা পায় না," বলেন ডঃ সিং, এবং যোগ করেন যে মোদী বিরোধীদের বিরুদ্ধে "অসংসদীয় ভাষার" প্রয়োগ করেছেন।

বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাফালে নিয়েও তোপ দেগে ডঃ সিং প্রশ্ন তোলেন, কেন সরকার এই বিষয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনে বাধা দিচ্ছে? তাঁর বক্তব্য, এতে প্রমাণ হয় যে সরকার কিছু গোপন করতে চাইছে। "দেশের মানুষ রাফালে চুক্তিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। বিরোধীরা এবং আরও অনেকেই চাইছেন যে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠিত হোক, কিন্তু মোদী সরকার তা করতে রাজি নয়। ইসসে পাতা লাগতা হ্যায় কি ডাল মে কুছ কালা হ্যায় (এতেই প্রমাণ হয় যে ডালের মধ্যে কালো আছে),” বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিজেপিকে হারাতে বিরোধীদের একজোট হতে হবে: মনমোহন সিং

প্রসঙ্গত, ফরাসি সরকারের কাছ থেকে ৩৬ টি রাফালে জেট বিমান কেনার বিষয়টির তদন্ত করতে কংগ্রেস পার্টি লাগাতার যৌথ সংসদীয় কমিটির দাবি জানিয়ে চলেছে, বিশেষ করে যেহেতু এই ডিলের এক অংশীদার হচ্ছে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স ডিফেন্স লিমিটেড, যে সংস্থার "বিমান বানানোর অভিজ্ঞতা একেবারে শূন্য"।

এদিন নোট বাতিল প্রসঙ্গে ডঃ সিং বলেন, এর যা উদ্দেশ্য ছিল, তা অধরাই রয়ে গেছে, এবং নোট বাতিল এক পাহাড়প্রমাণ অসাফল্যের নজির। "নোট বাতিলের সপক্ষে মোদী সরকারের কোনও যুক্তিই খাটে নি। কোনও কালো টাকা ফেরত আসে নি।"

মোদী সরকারের শাসনকালে দুর্নীতি তুঙ্গে উঠেছে, একথা বলে ডঃ সিং মন্তব্য করেন যে, যদিও নোট বাতিলের ফলে হওয়া ক্ষতি আর পূরণ করা সম্ভব নয়, মানুষের উচিৎ এই সরকারকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া। তিনি বলেন, "এর পরের কংগ্রেস জিএসটি-র সরলীকরণ করবে, কিন্তু নোট বাতিলের ক্ষেত্রে কিছু করার নেই। এবার মানুষের উচিৎ, যে সরকার তাঁদের এই সর্বনাশের পথে নিয়ে এসেছে, তাকে বিদেয় করা।"

সিবিআই-তে বর্তমানে চলতে থাকা সঙ্কট - যার জেরে দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার এক এবং দু নম্বর অধিকর্তা একে অন্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন, যার ফলে দুজনকেই ছুটিতে পাঠানো হয়েছে - সম্পর্কে ডঃ সিং বলেন এই পরিস্থিতি গণতন্ত্রকে ধাপে ধাপে দুর্বল করার একটি প্রচেষ্টা। "আইনের শাসন আজ বিপন্ন, এবং সংসদ ও সিবিআই-এর মতো প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতাকে পরিকল্পিতভাবে ছোট করা হচ্ছে," বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: মোদিকে সাবধান করুন, রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে বললেন মনমোহন

মধ্য প্রদেশ নির্বাচনে কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল বেকারত্ব। এই প্রসঙ্গে ডঃ সিং মনে করিয়ে দেন যে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ বেকারত্বের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছেন। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দু'বছরে মধ্য প্রদেশে  বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ।

"গড় হিসেবে প্রতি বছর মধ্য প্রদেশে মাত্র ১৭,৬০০ কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ বেকারত্বের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন বিজেপি-শাসিত মধ্য প্রদেশে। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭৩০ টি পিওনের পদের জন্য আবেদন করেন ২,৮১,০০০ জন এমবিএ, এলএলবি, পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থী। এটি এরাজ্যের বেকার সমস্যার তীব্রতার জ্বলন্ত উদাহরণ," বলেন তিনি।

PM Narendra Modi Rafale Demonetisation
Advertisment