Advertisment

মৌসম বদল, হাত ছেড়ে জোড়াফুলে গণিখানের ভাগনি

তৃণমূলে যোগ দিয়ে এদিন মৌসম বলেন, মোদী তথা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রকৃত মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই ব্রিগেডে এসেছিলেন সারা ভারতের বিরোধী নেতৃত্ব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কথা দিয়েছিলেন, কিন্তু কথা রাখলেন না মৌসম বেনজির নূর। মালদা উত্তরের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম যোগ দিলেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে। ১৪ নভেম্বর রাজ্য কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে এসে প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রকে এই মৌসমই বলেছিলেন, "সোমেন মামা, আমি কংগ্রেস ছাড়ব না।" কিন্তু কথা রাখতে পারলেন না মৌসম নূর। সাবেক কংগ্রেস রাজনীতির প্রবাদপ্রতিম বরকত গণিখান চৌধুরির ভাগনি এবার দল বদল করে আশ্রয় নিলেন মমতা শিবিরে।

Advertisment

সোমবার নবান্নে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের তরফে মালদা জেলার দায়িত্বে থাকা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তৃণমূলে প্রবেশ ঘটল মৌসম বেনজির নূরের। তৃণমূলের প্রতীকে মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বরকত-ভগিনী রুবি নূরের কন্যা মৌসম।

কেন দল ছাড়লেন মৌসম নূর?

তৃণমূলে যোগ দিয়ে এদিন মৌসম বলেন, মোদী তথা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রকৃত মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই ব্রিগেডে এসেছিলেন সারা ভারতের বিরোধী নেতৃত্ব। তিনি জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনী লড়াইয়ে বিজেপি-কে 'এক ইঞ্চি' জমিও ছাড়বেন না। তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, মালদা উত্তর আসন থেকে জয় নিশ্চিত করতেই মৌসমের এই দল বদল। এই মুহূর্তে মালদায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে বিজেপি। ফলে, এই পরিস্থিতিতে ত্রিমুখী লড়াই হলে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে মৌসম নূরের জয়ের সম্ভবনা কার্যত শূন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বাস্তবতা অনুভব করেই কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গণিখান চৌধুরির ভাগনি।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের জারি করা এক প্রেস বিবৃতি অনুযায়ী, "আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সাথে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কোনোরকম নির্বাচনী সমঝোতা ও জোট হচ্ছে না, এটা বুঝতে পেরে মৌসম বেনজির নূর দলত্যাগ করেছেন। মৌসম নূর কে দলত্যাগ না করার জন্য রাজ্য কংগ্রেস এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্ব বারম্বার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি বারম্বার জানিয়েছিলেন যে তিনি দলত্যাগ করছেন না। বাস্তবে দেখা গেলো তিনি দলীয় নেতৃত্বের সাথে এবং দলের কর্মীদের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। আজও সকালবেলায় তাঁর সাথে আমার দূরভাষে কথা বলার সময়, তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত আছেন এমন কথা উল্লেখ করে জানান যে, তিনি আমায় পরে ফোন করবেন। কিন্তু আর তিনি ফোনও করেন নি।

আরও পড়ুন: “সোমেন মামা, আমি কংগ্রেস ছাড়ব না”

"তাঁর দলত্যাগ করায় মালদহে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কোনো রাজনৈতিক ক্ষতি হবে না বলেই আমরা মনে করি। ইতোমধ্যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য মালদহ (উত্তর) লোকসভা আসনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে বরকত গণিখান চৌধুরীর পরিবারের যোগ্যতম প্রতিনিধি বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরীর নাম প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে স্থিরও করা হয়েছে এবং মালদহ জেলা কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু করে দেওয়া হয়েছে।



"তবে আমাদের দুঃখ একটাই যে, শ্রীমতী মৌসম নূর ছিলেন মাননীয় বরকত গণিখান চৌধুরীর বংশের প্রতিনিধি, তাই তাঁর এহেন দলত্যাগ ও বিশ্বাসঘাতকতা প্রকারান্তরে আমৃত্যু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাসী প্রয়াত বরকত গণিখান চৌধুরীর প্রতি অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের বিশ্বাস আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মালদহের মানুষ প্রয়াত বরকতদার প্রতি এই অপমানের যোগ্য জবাব দেবেন।"

ওদিকে মৌসম বেনজির নূরের দল বদলের খবরে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, তাঁর এই দল বদলে কংগ্রেসের কিছু যায় আসে না। মৌসমের সঙ্গে একজন কর্মীও নেই বলে দাবি করেছেন প্রদীপ। তাঁর আরও দাবি, জনসাধারণের অভিমুখ যদি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের দিকে না হয়, তাহলে এ নিয়ে চিন্তা করার কোনও কারণ নেই।

CONGRESS General Election 2019 tmc
Advertisment