পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানো নিয়েও বিরোধী নিশানায় মমতা সরকার। তোষণ রাজনীতিকে সামনে রেখেই এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানো হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির। লকডাউনে অসহায় পরিযায়ীদের ফেরাতে রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত আবেদন করছে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুলেছেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। পাল্টা গেরুয়া শিবিরকে বিঁধে তৃণমূলের কটাক্ষ, বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের জন্য কিছুই করেনি মোদী সরকার।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, শুধুমাত্র একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে বাড়ি ফেরাতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাকিদের জন্য কোনও হেলদোল নেই। তিনি বলেছেন, 'এ রাজ্যের বহু মানুষ তীর্থ, চিকিৎসা বা অন্য কারণে বাইরের রাজ্যে গিয়ে আটকে রয়েছেন। তাঁরা বাড়ি ফিরতে উদগ্রীব। অথচ রাজ্য সরকার করোনার জন্য যে হেল্প লাইন ফোন নম্বর দিয়েছে তাতে কেউ যোগাযোগ করে পাচ্ছে না। সম্প্রতি আজমের থেকে বাংলা ফিরেছেন প্রায় ১১০০ মানুষ। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে তাঁরা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের। কেরালা থেকে যাঁরা ফিরেছে তাঁদের বেশিরভাগের পরিচয়ও একই।' দিলীপ ঘোষের দাবি, এখনো পর্যন্ত ট্রেনে করে ভিনরাজ্য থেকে যাঁরা পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন তাঁদের মধ্যে কোনও পরিযায়ী শ্রমিক নেই। অথচ এই শ্রমিকদের জন্যই ট্রেন চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন- লকডাউনে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিয়ে দেশের মাটির ছুঁল ২ বিমান
গত মঙ্গলবার রাজস্থানের আজমের থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন ১১০০-রও বেশি মানুষ। আজমের শরিফে গিয়ে লকডাউনের জেরে তাঁরা আটকে পড়েছিলেন। বুধবার আরেকটি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে কেরালা থেকে মুর্শিদাবাদে পৌঁছয়।
আরও পড়ুন- হাতে টানা সাইকেলেই দু-সপ্তাহ! আর দিল্লিতে ফিরবেন না জুবের
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো প্রসঙ্গে মমতা সরকারের ইচ্ছা-শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়, 'বেঙ্গালোর থেকে বাংলায় শ্রমিক স্পেশাল করে পরিযায়ীদের ফেরাতে মমতা সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি। রেলমন্ত্রী পিযূস গোয়েল নিজে আমাকে সে কথা বলেছেন। বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে কতগুলি ট্রেন লাগবে তা জানার অপেক্ষায় কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার এখন কিছুই বলছে না। যদি পরিযায়ীদে শ্রমিকদের ফেরাতে রাজ্য সরকার ইচ্ছুক না থাকে তবে স্পষ্ট করে সেটা বলে দেওয়া দরকার।'
সমালোচনার জবাবে পদ্ম বাহিনীকে নিশানা করেছে জোড়া-ফুল শিবির। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন, 'প্রথমত, বিভিন্ন রাজ্যে আটকা পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে যাতায়াতের কোনও উপায় ছিল না। দ্বিতীয়ত, লকডাউনে চরম দুর্দশায় এইসব শ্রমিকরা।তাঁদের ফেরাতেও মোদী সরকার ট্রেনের ভাড়া চাইছে। কেন্দ্র সহায়তার বদলে এঁদের জীবন সম্পূর্ণ অনিশ্চতার মুখে ঠেলে দিয়েছে।' এরপরই রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি জানিয়েছেন, 'বাংলার সরকার পরিযায়ীদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী। তাঁদের আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারকে ছোট না করে কেন্দ্র প্রত্যেক পরিযায়ীদের আর্থিক সাহায্য করুক। তাঁদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিক।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন