২০২১ নির্বাচনের থেকে ভোট কম পড়েছে বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আসনে এবার তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু ব্যাপক ভোট কমেছে তৃণমূল কংগ্রেসের। একইসঙ্গে শতাংশের হিসাবে আগের থেকে ব্যাপক ভোট কমেছে ঘাসফুল শিবিরের। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে পিছনে ফেলে বামফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন বালিগঞ্জ আসনে। রাজনৈতিক মহলের মতে, মুসলিমদের একটা বড় অংশ মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায় ভোট কমেছে তৃণমূলের।
একবছর আগে, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় পেয়েছিলেন ১,০৬,৫৮৫টি ভোট। যা শতাংশের হিসাবে ৭০.৬০। এবার তৃণমূল কংগ্রেস ভোট পেয়েছে ৫০,৯৯৬। শতাংশের হিসাবে ৪৯.৭। ভোট কমেছে প্রায় ২০ শতাংশের বেশি। ২০২১ নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিম ভোট পেয়েছিলেন ৮,৪৭৪। ভোট শতাংশের হিসাব ৫.৬১। এবার তাঁর স্ত্রী তথা বালিগঞ্জের বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম পেয়েছেন ৩০,৯৪০টি ভোট। ৩০.১ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট বেড়েছে সিপিএমের। বিজেপি গতবার এই কেন্দ্রে ভোট পেয়েছিল ৩০,৯৪০। ২০.৬৮ শতাংশ ভোট। এবার গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে গিয়েছে ১৩,১৭৪টি ভোট। অর্থাৎ মাত্র ১২.৮ শতাংশ। কংগ্রেসের গত বিধানসভা নির্বাচনে কোনও প্রার্থী ছিল না বালিগঞ্জে। সেখানে এবার কংগ্রেসও এখানে ৫ শতাংশের ওপরে ভোট পেয়েছে। কংগ্রেসের মোট ভোট প্রাপ্তি ৫,২০৫টি।
বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়ার দাবি, 'আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েই বালিগঞ্জে মুসলিমদের একটা বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়নি। ৬৪, ৬৫ ওয়ার্ডে সিপিএমের কাছে হেরেছে তৃণমূল। তৃণমূলের ভোট কমেছে ৬০,৬১ ও ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডেও। আমরা একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম তৃণমূলকে, তাতে আমরা সফল। বাবুলকে মন্ত্রী করলে আরও ভুল করবে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে এভাবে ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট কমে গেলে পরবর্তী নির্বাচনে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে তৃণমূল।'
উল্লেখ্যে, বাবুল সুপ্রিয় প্রার্থী হওয়ায় মুসলিমদের একটা অংশ সরাসরি বিরোধিতা করেছিল। সংখ্যালঘু ভোট যে তৃণমূলের বড় ভরসার জায়গা তা আগেই বলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কিন্তু সেই ভোট ব্যাংকেই ধস নেমেছে বালিগঞ্জে। রাজনৈতিক মহলের মতে, উপনির্বাচনে জয় পেলেও কড়া চ্য়ালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে ঘাসফুল শিবির।